বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০১৪

প্রহেলিকার আত্মকথন-৫

আজ আর আমি দিকভ্রষ্ট হইনা কোন বিকলাঙ্গ ছাঁয়ার প্রতিবিম্বে, কারো অনুগ্র চাহনিতে বাজাই না পৌরাণিক সরোদ। নিরুক্ত এই বর্ষায়, জলাশয়ে জন্মে না কোনো নীলপদ্ম, আসে না আর কোনো মিষ্টভাষী, বিলায় না মোহ। আমিতো এখন অমোঘ গণনায় অনায়াসে বলে দিতে পারি; আকাশে ভাসমান কুমারী মেঘের প্রসবকাল। প্রসিদ্ধ পোষাকে আবৃত উগ্র যে বাতাস; তার শরীর স্পর্শ করে বলে দিতে পারি গন্তব্যস্থল, সদর্পে আঘাত হানবে কার ঝরোকায়, কোন কাল নিশিতে। আজ আর কোনো স্বপ্নের কেন্দ্র বিন্দুতে করি না সঞ্চরণ। শুন্যগর্ভ দেহে হেঁটে যাই শ্মশান ধোঁয়ায়, স্ফুরিত আঁধারে খুঁজে নেই স্ফটিক শিশির কণা।এখন আমার শাণিত দৃষ্টি এড়িয়ে, অনুপ্রবেশ হয় না কোনো অলীক জোছনার, হয় না একাকী শয্যায় কোন দ্বৈত দৃশ্যের অবতরণ। উদয় হয় না বিভ্রান্তির সূর্য এই অমর্ত্য আঙ্গিনায় অথচ আজও তুমি অতুল ধৃষ্টতায় এসে দখল করে নাও আমার প্রতিটি কবিতার শিরোনাম...

তারুণ্য উত্থান

জ্বলন্ত সূর্যকে কটাক্ষ করে সশব্দে নেমে আসে,অজস্র রাতের পুঞ্জীভূত আঁধার, পৃথিবী গুনে-অকালে ঝরে পরে কত নব পল্লবের সংসার,কত বাবা কাঁধে বয়ে বেড়ায় শেষ অবলম্বন।কাঁচ টেবিলের উপর সজ্জিত শেষ মোমপুতুলটি-প্রত্যুষ পূর্বেই আজ, নিঃশেষিত হোক সলতে দহনে।আমি অপলক তাকিয়ে থাকব নির্ঘুম দু'চোখে,স্বতঃপ্রবৃত্ত ক্লান্তির স্পর্শে ভূলুন্ঠিত অবয়বে।থাকব আমি মৃত্যুবধি তারুণ্য উত্থানের অপেক্ষায়,সফেদ হিমরেখা ছাড়িয়ে যে উত্থিত হবে সগৌরবে।&nbs...

শুক্রবার, ২০ জুন, ২০১৪

নীল বৃক্ষ

এখন কি সেই বৃক্ষের কান্নার শব্দ শুনতে পাও; ভর দুপুরে যার কাছে ছুটে যেতে লোকচক্ষুর আড়ালে? রঙিন লিলেনে আবৃত করে চাঁদমুখটি ছুটে গিয়েছিলে কত নিষিদ্ধ সময়ে? কলঙ্কের আশঙ্কায় যখন আঁতকে উঠেছিলে, ল্যাম্প পোস্টের আলোতে দেখে নিজের প্রতিবিম্ব, তখনি অদম্য ব্যাকুলতায় সে ছুটে এসেছিলো স্থানচ্যুত হয়ে। সুপ্রশস্ত বুকে জড়িয়ে দূর করেছিলো ভয়্সমগ্র, ভেজা চুলে বুলিয়েছিলো বিশ্বাসী হাত। মনে পড়ে কি সেদিনগুলোর কথা? নতজানু হয়ে বলেছিলে, তার সবুজ শেকড়ের নির্যাস পানে পূর্ণতা চাও, তুমি হাসতে চাও সদ্য গজানো সবুজ পত্রের মত; মনে পড়ে কি? তোমার আকুতিতে দ্রবীভূত তার নিরেট দেহ। এক নিমিষেই ছুটে গিয়েছে, “পৃথিবী”-এর বুক থেকে “প” কে কেড়ে এনে তোমাকে দিয়েছে “পূর্ণতা”, অবিলম্বে ফুটিয়েছে হাসি নিস্বার্থে। আজ কি তার কোনো খবর রাখো; যে তোমার ওষ্ঠে ওষ্ঠ রেখে কষ্ট শুষে নীল হয়েছে? চির সবুজ বনানীতে...

অঙ্কুরে বিনাশ

সমুদ্রে মিশে যাওয়া এক ফোঁটা শিশিরের খোঁজে-দুলছে ক্লান্ত দেহ, সূর্যরাগে কুঁচকানো কপালেযতি চিহ্নের শেষে দাঁড়িয়ে থাকা, অনুক্ত শব্দেরাঘুরছে চক্রাকারে। দ্রোহী পায়রার দল মেতেছে-গুঞ্জনে বন্ধ্যা মেঘদের সাথে। শুন্যবাদে বিশ্বাসীরুমালে অঙ্কিত স্থিত হাসিতে ধ্বংসের আমন্ত্রণ।উন্মাদ বাতাসের বিপরীতে দাঁড়িয়ে, তুলে আনা-তৃষ্ণার জলটুকু গড়িয়ে পরে আঙ্গুলের ফাঁকে।প্রমূর্ত শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকি, খেরোখাতারপৃষ্ঠায় লুকায়িত দুর্নিরীক্ষ্য স্বপ্নের সানুদেশে।কে যেন এসে স্পর্শ করে যায় নিষিদ্ধ অন্ধকারে,বাতাসের আড়ালে ঢেকে তার নিঃশ্বাসের নিনাদ।সন্তর্পণে গড়ে তোলা উদ্যানে মাকড়সা বুনছেনধর জাল। অঙ্কুরে বিনাশ জুয়াড়ির স্বপ...

নিরাপত্তার খোঁজে

সভ্যতার দৈত্য দখল করেছে হোগলার বনআধুনিক সৌখিনের ক্রুশে বিদ্ধ দক্ষ কারিগর,এক টুকরো খড়ের খুঁজে চষে হাজারো প্রাঙ্গন,তবুও মেলে না দেখা ক্রান্তিকালে, বিবর্ণ নগর।বৃষ্টিতে জুবুথুবু, ছুটে আসে নিরাপত্তার খোঁজে,অনর্থক কড়া নাড়ে বিবাদে লিপ্ত প্রাসাদ দ্বারে;যারা কর্তন করছে পৌরাণিক বৃক্ষ চোখ বুঁজে,যারা দলছে আপন নীড় উন্নয়নের আড়ালে।স্বচ্ছ কাঁচ জানালায় আটকে থাকা ত্রস্ত দু’চোখ,প্রকম্পিত ডানা ঝাপটায় আশ্রয়ের আর্তনাদে,কোমল শয্যায় সুপ্তি মোহে প্রসারিত দৃষ্টিসুখ,সুধীর দৃশ্যপট, অনিমেষে তাকায় নির্বিবাদে।ক্লান্ত দুপুরে আষাঢ়ে বৃষ্টির অদ্ভুত দ্যোতনায়,বিদ্রুপের প্রলেপে ঠাঁই পায় বিলুপ্তের পৃষ্ঠা...

স্বর্গের মেঘ পরী

আজ খুঁজছে ধরণী স্বর্গের মেঘ পরী-হন্য হয়ে, ফেলে যাওয়া তার চিহ্ন ধরে।খুঁজছে স্বজনে,অবোধ বদনে,উৎসুক নয়নে।খুঁজছে সবাই সেই অজ্ঞাত স্টেশনে।খুঁজছে সূর্যাস্তের শেষ চিত্রল ট্রেনে। সর্বত্রগামিনী মেতেছিলো সহযাত্রী হয়ে,স্পষ্টিত আপন গন্তব্যের বৈধ উচ্ছ্বাসে।আঁধারের গর্ভে প্রসবিত প্রফুল্ল জ্যোৎস্নায়-যখন পরিস্ফুটিত হয়ছে তার অচিন মুখ;নদীতে এসেছে বান,ভুবন করেছে স্নান,সেতার ধরেছে তান।অনর্থক মায়াজালে বন্দী সন্ধ্যা বাতাসে-মাতিয়েছে উল্লাসে, সৃষ্টি করে অগ্রণী বন্ধন,হৃদয়ের অভ্যন্তর দখলে বসত গেঁড়ে চিরস্থায়ী। অলীক সময়ের রূঢ় বিদ্রুপ নির্যাসে আজবিস্তৃত মায়ার শেকড় এই ধোঁয়াটে নিশিতে।উৎসর্গ : সোনেলার ব্লগার স্বর্গের মেঘ পরীকে। আমাদের সহযোদ্ধা হিসেবে আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ।...

স্কুটার

কালি শেষ হবার আগেই রেশমী কলম ছুঁড়ে ঝুপড়িতে বসে রক্তাম্বরে, মনের মুকুরে দেখে নবোদিত দিনের প্রতিচ্ছবি। জেনেও না জানার ভান ধরে তাকিয়ে রয়েছে পুল সিরাতের দিকে। স্কুটার তড়িৎ গতিতে ধেয়ে আসবে অথবা ভ্যানে চড়ে। মাথার উপর দিয়ে উড়োজাহাজ উড়ে যাবার শব্দও তার কাছে মনে হয় স্কুটার এই এলো বুঝি। আসবেতো নাকি পাকা ধানের অভিসম্পাতে নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামে? আমতা আমতা করতে করতে পিড়ি পেতে বসে থাকা উঠানে গিয়ে বাবাকে বলে আসবেতো? ওলা ওঠা বাবারও সাধ্য নেই না বলার। দাঁতে দাঁতে খিল ধরলেও সদ্য কলানো স্বপ্ন ভেঙ্গে দেওয়া ঠিক হবে না।পূর্বাহ্নের প্রারম্ভে স্কুটার হাজির করার প্রতিজ্ঞায় কালবেলাতেই কলেবরে তেল মেখে নেমে পরে লুঙ্গি পরে, একবারও সে বুঝতে পারেনি জমিদার বাড়ির নবোঢ়া অপেক্ষমান ফুলেল শয্যায়। কোমরে দড়ি বেধে যখন সারা পাড়া ঘুরানো হলো তা দেখে রেশমি চিপটান কাটে, উপহাস করে আধ বিঘৎ জিভ বের করে।...

মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০১৪

নিরাপত্তার খোঁজে

সভ্যতার দৈত্য দখল করেছে হোগলার বনআধুনিক সৌখিনের ক্রুশে বিদ্ধ দক্ষ কারিগর,এক টুকরো খড়ের খুঁজে চষে হাজারো প্রাঙ্গন,তবুও মেলে না দেখা ক্রান্তিকালে, বিবর্ণ নগর।  বৃষ্টিতে জুবুথুবু, ছুটে আসে নিরাপত্তার খোঁজে,অনর্থক কড়া নাড়ে বিবাদে লিপ্ত প্রাসাদ দ্বারে;যারা কর্তন করছে পৌরাণিক বৃক্ষ চোখ বুঁজে,যারা দলছে আপন নীড় উন্নয়নের আঁধারে।স্বচ্ছ কাঁচ জানালায় আটকে থাকা ত্রস্ত দু'চোখ,প্রকম্পিত ডানা ঝাপটায় আশ্রয়ের আর্তনাদে,কোমল শয্যায় সুপ্তি মোহে প্রসারিত দৃষ্টিসুখ,সুধীর দৃশ্যপট, অনিমেষে তাকায় নির্বিবাদে।ক্লান্ত দুপুরে আষাঢ়ে বৃষ্টির অদ্ভুত দ্যোতনায়,বিদ্রুপের প্রলেপে ঠাঁই পায় বিলুপ্তের পৃষ্ঠা...

শনিবার, ৭ জুন, ২০১৪

ঢিল

কখনোতো তোমার নিশানা লক্ষভ্রষ্ট হয়নি !হারানোর শঙ্কারোধে যে বৃক্ষের বিস্তীর্ণ কোটরেতুমি ঢিল ছুঁড়ে ছিলে তিন বার করে সহস্রবার,সে কোটরের অনেকটা আজও শুন্যতায় ভরাট,রয়েছে হাতের নাগালেই পাথরের সুবিশাল সমুদ্র।তবে আজ কেন বৃষ্টির জলে স্নান করে অশ্রুমালা,একাকীত্বের মোড়কে জনারণ্যে খুঁজে বেড়াও সহযাত্রী!...

সোমবার, ২ জুন, ২০১৪

হাইকু গুচ্ছ-১

১ চৈত্র তাপর বিষপান করে কালো পাহাড়জ্বলে অহর্নিশ।  ২অবরুদ্ধ নীলমিশে যায় বৃষ্টির সাথেখোলে রুদ্ধ খিল।  ৩নিশ্ছিদ্র দেয়ালবিস্তৃত অলীক জোছনাবিদীর্ণ খেয়াল।  ৪সচকিত নড়েঝুলন্ত কিশোর পোশাকজড়তার ভরে।  ৫অপেক্ষায় বয়স বাড়ে অশুদ্ধ ভাবনায়জীবনকে দেয় সায়।   ৬ পথের প্রান্তে নূতন পথ,দ্বিধা পূর্ণ মন,জয়ী বিচক্ষণ। ...

লোডশেডিং

গিন্নির হাতে বানানো পান মুখে দিতে দিতে কর্তা বাবু বললো, “লোডশেডিং যেভাবে দিন দিন বাড়ছে তাতে তো সিদ্ধ হয়ে মরতে হবে অতি শীগ্রই, অতিষ্ট হয়ে পড়েছি, আরতো পারি না। ” কর্তা বাবুর কথা শুনে গিন্নির মুখে একটা স্পস্ট দুঃশ্চিন্তা ছাপ দেখে সাথে সাথে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়লো হরিপদ। মনে মনে ভাবতে লাগলো এই লোডশেডিং টা কি, যা কর্তা বাবুর মত বড় মানুষকে সিদ্ধ করে দিতে পারে? কর্তা বাবুকেই জিজ্ঞাসা করবে এই “লোডশেডিং” টা কে, কি অথবা আসলো কোথা থেকে? কর্তা বাবুকে প্রশ্ন করতে যেই না মুখ হা করলো হরিপদ, তখনি মনে পরে গেল দিনের প্রারম্ভে কর্তা বাবুর সতর্কবাণী। আজ সকালে কর্তা বাবুকে যখন হরিপদ জিজ্ঞাসা করেছিলো, ” কর্তা, সুবল বললো আগামী শুক্রবার নাকি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে?” তখনই কর্তা তাকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, আজকে দিনে আর একটা প্রশ্ন করলে নূতন কিনে আনা ছাতাতে তার মেরুদন্ড ভাঙ্গা হবে। মেরুদন্ড বাঁচাতে গিয়ে আর কোনো প্রশ্নই করলো...

Page 1 of 3412345Next
Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by প্রহেলিকা