শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আধারের প্রহেলিকা

লিখাটি আমি শব্দনীড়ের লেখক শ্রদ্ধেয় মুরুব্বী ও মহাকালের প্রতিচ্ছবি কে উত্সর্গ করলাম। আমি লিখতে জানি না। দরজার ওপাশে দাড়িয়ে আমার হাতে কলম তুলে দিয়ে যারা আমাকে অনুপ্রানিত করে আসছেন সর্বক্ষণ তাদের এই দু'জনের নামে আমি আমার এই কবিতা লিখনের ক্ষুদ্র প্রয়াসটিকে উত্সর্গ করলাম। আমার শ্রদ্ধা জানবেন আপনার দু'জন।


পূর্ণতা পেত আমার দিনমান সাঝের মন্দানিলে
করে স্নান তিতাসের সুরেলা লহরীর ঝংকায়। 
আজ অপরূপ যন্ত্রনায় কাতর ক্রমশ নিজেকে গুটাচ্ছে 
স্রোতহীনতায় পর্যাকুল মানবকুল রয়েছে শংকায়।
কলংকের সাক্ষী হয়ে সূর্য অস্তে যায় নিদারুন কষ্টে,
মুগ্ধতা নিতে আসা আমি ক্রুশবদ্ধ আধারের প্রহেলিকায়। 

বিজয় মুকুট পরিহিত স্রোতসিনীতে ভাসে কলঙ্কিত কচুরীপানা
ভাসে অবয়ব সেই ধর্ষিত আত্মহননকারী কিশোরীর।
বালক মাঝির খেয়ায় জন্মদাতা পাড়ি জমায় ওপাড়ের বৃদ্ধাশ্রমে
ভাসে জল, পুত্র শোকে কাতর গর্ভধারিণীর অশ্রুবারির ।
বিশুদ্ধ বিবর্তনে গোলা-বারুদ উঠে আসে ধীবরের জালে,
পলিতে আধ ভরাট প্রবাহিনীতে ভাসে রাক্ষসী মত্সশরীর।

শত কলঙ্কের প্রতিচ্ছবি ধারণ করা এই মাতৃসম নদীর বক্ষে
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকরে রমনী ছেড়ে দেয় নিষিদ্ধ বালকের হাত,
তলিয়ে যায় তটিনীর তলদেশে, হয়ে অসহায় কাপুরুষ।
নিশীথ তিমিরে খুঁড়ে প্রতিক্ষণে নুতুন মরণ নেশার ফাঁদ।
পরিশুদ্ধতা খুঁজে তিতাস, দূরের সরল তরুণ বৃক্ষটির পানে।
তার আকুলতায় মোর মনশ্চক্ষুর ছপ্পর ফুঁড়ে ভাঙ্গে বাঁধ।

তরঙ্গাকুল হৃদয় আমার,মহাকালের প্রতিচ্ছবি তুমি কোথায়?
দর্শাও তুমি পূর্বে রয়েছে যত তারুন্যের দহনে গত ক্রান্তিকাল।
হে মুরুব্বি দাও দিক নির্দেশনা রেসকোর্স ময়দানের ন্যয়।
বৈশাখী ঝড়ে উড়াব কলঙ্ক, তিতাসের পাড়ে জ্বালাব মশাল।
"বল বীর-
চির-উন্নত মম শির"
বক্ষে গেথেছি বিদ্রোহী কাব্য, তিতাসের বুকে আজ একাই উড়াব পাল।


বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

শুকনো নদী

শুকিয়ে ছিলাম এক শতাব্দী,
ভেবেছিলাম হয়ে যাব নিষ্প্রাণ,
ফোটা ফোটা অশ্রুজল রূপান্তরিত নদী
কখন আবার গাইব গান?

আজ সকালটা ছিল কুয়াশায় ঢাকা 
যেদিকে তাকায় শুধু সাদা আর সাদা ,
হঠাৎ স্তব্ধিত আমি রুখে দাড়ালাম 
সার্থক বুঝি জন্ম থেকে কাঁদা।

কিছুই ছিলনা বলার আমার,
শব্দটা ছিল শত বছরের চেনা।
দীর্ঘতপার পর আজ ঝড় তুলল 
রাজহংসীর ঝাপটানো ডানা।

কিভাবে বরণ করে নিব আমি তাকে?
অপেক্ষা আমার ধরে শত বছর। 
তার পদসঞ্চারেই ধন্য আমি,
নতুবা হতাম ধু ধু বালুচর। 

জানিনা কোন আন্দু পরাব তোর পায়ে 
হাসি আর গানে এই বুকে করবি খেলা। 
যখন খুসি ডানা মেলে কাটবি সাতার,
হোক না সে বিষাদময় দুপুরবেলা।

তুইতো আমার সেই অংশিত কল্পনা,
আমার স্বপ্নময়ী রাজহংসী। 
না না তুই রাজহংসী না 
যেন কৃষ্ণের হাতে সুরেলা বংশী। 

রাজহংসী তোর ডানার বড় ভয় আমার 
উড়ে যেতে পারিস যখন খুশি তোর। 
বলি শুধু করিস না শূন্য এই দিপাধার 
ভিড়বে না তরী জানি আসবে না আর ধীবর। 

যেতে দিব না আর কোথাও তোকে 
বন্ধ করে দিব মোহনার সব পথ। 
উড়াল দিবি না কোনো রাজহংসের পিঠে 
শুধু চাই তোর একটি শপথ। 

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কিভাবে বাঁচব আজ

কোথায় হবে আজ রাত্রি যাপন
নেই যে কোনো আত্মার বাঁধন 
সামনে নিঝুম কালো বন
ভীত মনে কাপছে বদন
জীবনে কেন এমন ক্ষণ
দু চোখে শীতল রক্তক্ষরণ
হয়ে যাচ্ছি আজকে হরন
কোথায় আমি যাব এখন ?

জানিনা আমি কাটতে সাঁতার 
সামনে আছে অকূল পাথার
মাস যে এখন কৃষ্ণচূড়ার 
তবুও গর্জন মেঘ মালার
রুখবো কেমনে সকল বাঁধার 
সঞ্চিত নেই ক্ষুধার আঁহার 
ধেয়ে আসছে উচু পাহাড়
কোথায় আছে পথটি বাচার?

আলো নেই আজ অগ্নি শিখায়
জীবন আধারে হাতড়ে বেড়ায়
সর্প দংশে পায়ের গোড়ায়
বাঁচব কেমনে চৈত্রের খরায়
শক্তি যে নাই পথ চলায়
আশ্রয় খুঁজি বৃক্ষের শাখায়
দোয়েলের ওই নিবিড় পাখায়
শব্দনীড়ের কাব্য পাতায়।

হবে হৃদয় আজ সন্ন্যাসী
কোথায় যে সে রক্ষাচাষী
যে নেবে মোর দুঃখ রাশি
যত্নে বলবে ভালবাসি
পরম সুখে দিব হাসি
হাতে নিব রাখাল বাঁশি। 
আসুক ঝড় সব সর্বনাশী
তবুও বাইবো দাড় দিবানিশি।

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

অগ্র পশ্চাতের কলহ


পশ্চাতে ক্ষুধার্ত ছিল জননীর বুকের ধন 
গহীন রাতে ভাসমান বীরঙ্গনার আরতি 
অগ্রে দেখো কল্ল্যানময়ী চামেলীর বন 
রয়েছে আরো তপ্তকাঞ্চন সত্যের বসতি 
গত হয়েছে শত মন্দের আরাধন
ধরনীতে আজ তারুন্যের দ্যুতি। 

বিশাল বঙ্গতে চাই কিছু পরোয়ানা 
ফিরে পেতে চাই পশ্চাতের সোনালী আঁশ
আজও আছে কিষাণের বক্ষপুরে যন্ত্রণা 
দেবমাতৃক দেশে ভাসে দীর্ঘশ্বাস 
ধানী জমিতে চাই না কল কারখানা 
গাছে গাছে ফুটুক ফাগুনের পলাশ। 

প্রেমের প্রহেলিকায় ছিল তরঙ্গাকুল পাথার
আজ পর্ণমোচী বৃক্ষের মত প্রেমের সুর 
বড়শি হাতে দেখি সব চন্ডিদাসের বাহার
নেই শুধু পশ্চাতের সেই শুকনো পুকুর
পশ্চাতের প্রেমে ছিল না পাংশুটের পাহাড়
প্রেমময় তরঙ্গ ছিল সকাল দুপুর।

দু কদম পিছনে রয়েছে তুখোড় কৈশোর
দু কদম সামনে জ্বলন্ত যৌবন
অগ্র পশ্চাতের কলহে হল আজ ভোর
ধরিত্রীর বুকে বহে বাতাস শন শন
শক্ত হস্তে বাধব অগ্র পশ্চাতের ডোর
নিবিড় ভালবাসায় ঘেরা এই নিকেতন। 

আমিন এর কাব্য 

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভোরের প্রত্যাশা


মিথ্যের মাঝে তোরা সবাই আমাকে ডুবিয়ে রেখেছিস ,
মিথ্যেকে ভাপিয়ে বানিয়েছিস সত্যের বরফ ,
সত্যকে পাঠিয়েছিস কল্পলোকে।
দিবালোকে আমার চোখ ঢেকেছিস কালো পর্দায়।
করমর্দনে দিয়ে যাচ্ছিস ভঙ্গুর প্রতিশ্রুতি।

সবুজ দেশের মাটিতে আর নেশা নয়,
বিদায়লগ্নের আলিঙ্গনে করেছিলি তোরা প্রতিজ্ঞা। 
প্রবাস থেকে পারছিনা ক্ষিপ্ত হয়ে কেড়ে নিতে,
তোদের  হাতের বিষাক্ত গোলাপী টেবলেড। 
পারছিনা খুলে দিতে ঘরের সব বন্ধ জানালা। 

অন্ধ বলে ভাবিস না আমার ভালোবাসাও আজ অন্ধ ,
ভুলে যাসনে আমিই ছিলাম তদের আড্ডার মধ্যমণি।
আমি আবার প্রত্যাবর্তন করতে চাই তোদেরই মাঝে।  
শূন্য হাত বাড়ালাম তোদের পানে, দে ভিক্ষা-
চল আমরা আবার যাই মান্না দে' এর কফি হাউসে।  

বন্ধু তোরা ফিরে আয় এই সকালে সেই পুরনো পথে,
রাতের অন্ধকার কাটিয়ে দিল সূর্যের প্রভা,
রাতের শিশিরে ভিজিয়ে নে তোদের কচি মন। 
আমি আছি তোদের অপেক্ষায় ,থাকব অনন্তকাল,
বেরিয়ে আয় নেশার জীবন থেকে, হাসব সারাক্ষণ।

শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

চলে আস তুমি

নদী তুমি কেন আমার বুকে আছড়ে পড়না ?
দেখো পুষ্পমাসে বাজে বুকে মাঘোত্সবের মাদল। 
পক্ককেশের আড়ালে নিজেকে কেন রাখো লুকিয়ে ?
তোমারি অভাবে ভাসে নীল আকাশে কালো মেঘের দল।  

পিপাসিনী হয়ে তুমি কেন করছ পায়তারা ?
বিশ্বস্ত এই বিশাল বুকে কেন করনা আঁখিপাত।
কেন ভিজাও না চরণ দুটি আমার নিশাজলে ?
তোমারি অভাবে হৃদয়ে ঘটে অবিরত উল্কিপাত।  

চলে আস তুমি এই বুকের শূন্য নগরীতে, 
তোমারি অজ্ঞাপনে করব ফের নগরকীর্তন।
মূদ্রিত হবে সুখের কাব্য, ধরনীর বুকে উচ্ছাস ,
খেয়াঘাটে ভিড়বে তরী,রবে পাখির কূজন। 

বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

একুশে ফেব্রুয়ারী ভ্যালেন্টাইনস ডে না।

কথা বলছিলাম বন্ধুর সাথে এই দূর প্রবাস থেকে। হঠাৎ বন্ধু বলল আমাকে দোস্ত একটু পরে কথা বলছি। ৫ মিনিট পরে ফিরে আসলে তাকে জিজ্গেস করলাম কোথায় গেলি? সে বলল কোথাও না। বললাম তাহলে ফোন রেখে দিলি যে ? সে বলল আরে কালকে তো ২১শে ফেব্রুয়ারী তো আমার গার্ল ফ্রেন্ড শহীদ মিনারে যাওয়ার নাম করে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তাই ও এখন ফোন দিয়ে বললো আমাকে কোথায় যেতে হবে। আমি বললাম ও আচ্ছা তার মানে গত ৭ দিন আগে ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করেও কি তোমাদের ভালবাসার স্বাদ মিটল না ? যদিও জানি কথাটাকে সে খুব ভালোভাবে নিল না। যাই হোক ওর সাথে কথা বলা শেষ করেই লিখতে বসলাম।

ভালবাসা তুমি মানুষকে অন্ধ করে দাও আমি জানি। এই অন্ধ ভালবাসা কারণে দেখতে পাচ্ছি না আমাদের নৈতিক কি কি অবক্ষয় ঘটছে। আপনারা কেউ কি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন, যে এমন কোনো যুগল দেখেননি যারা শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর নাম করে এই দিবস তাকে তারা পালন করছে বেহায়া দিবস হিসাবে ? কেউ যদি না দেখে থাকেন আমাকে জানাবেন। ঠিকানা দিব গিয়ে দেখে আসবেন নিজের চোখে।

আমি লজ্জিত হে সালাম ,রফিক ,জব্বার, শফিউর ও আরো অনেকের কাছে  যারা এই ভাষার জন্য তাদের প্রশস্ত বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছেন রাজপথে। আমি সত্যি খুব লজ্জিত আজ আমরা তোমাদের মত তরুণ হয়েও তোমাদের রক্ত বিসর্জন দিয়ে এনে দেওয়া দিবসকে পুজি করে তুলছি প্রেমিক প্রেমিকার সাথে দেখা করার সুযোগের স্বার্থ। শহীদ মিনারে অনেকেই আবার ফুল দিতে অস্বীকৃতি জানান, বলেন আমরা কি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে পূজা করব নাকি ? ফুল দিলে গুনাহ হয়। মেনে নিলাম তোমাদের কথা আমি। যারা বাংলাকে মাতৃভাষা করার দাবিতে তাদের তাজা রক্ত বিসর্জন দিয়ে গেল, যাদের রক্তের বিনিময়ে কথা বলতে পারছি আজ এই প্রিয় বাংলা ভাষায় তাদের জন্য কি তোমরা একটা ফাতিহারও আয়োজন করতে পার না ?ফুল দিলে পূজা হয় কিন্তু ফাতিহা দিলে তো আর পূজা হয় না। যাইহোক আমাদের ফুলের শ্রদ্ধা অথবা শহীদদের স্মরণে ফাতিহার আশায় সেদিন ওই দামাল ছেলেরা জীবন দিয়ে যায়নি। তারা যা অর্জন করে যাবার তারা তা অর্জন করেই গেছে। আর আমাদেরকে দিয়ে গেছে গার্ল / বয় ফ্রেন্ডের সাথে দেখার করার একটা সুবর্ণ সুযোগের দিন। একবার ধন্যবাদ তো দাও তাদের এই দিন দিয়ে যাবার জন্য। 

এবার আমার কিছু ব্যাক্তিগত কোথায় আসি। আমার মোবাইলে গানের প্লে লিস্টে প্রায় ৪৭৮ টি গান আছে। রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল সংগীত, আধুনিক বাংলা সব গান মিলিয়ে বাংলা গানের সংখ্যা মাত্র ২২০টি। আর বাকি ২৫৮ গান ইংলিশ ও হিন্দী। একটু আগে ভাবলাম আর ভেবে লজ্জিত হলাম অনেক ,যে আজ কাল আমাদের মোবাইলে বাংলা গানের চেয়ে হিন্দী গানের সংখ্যাই বেশি থাকে। ভেবে আসলেই খুব লজ্জিত হলাম। এর একটু পরেই ভাবলাম আজ আমি এতসব কেন ভাবছি। জবাব পেলাম কাল ২১শে ফেব্রুয়ারী আর ১৯৫২ সালে এই দিনে শুধু বাংলাকে মাতৃভাষা করার জন্য জীবন দিয়ে গেল কিছু মা পাগল সন্তান। আমি তাদের মত হতে পারলাম না। কাল ২১শে  ফেব্রুয়ারী বলে আজ অনেক কিছু ভেবে ফেললাম কিন্তু আমি কেন ভাবি না বছরের প্রতিটা দিন তাদের কথা যাদের বিনিময়ে আমি প্রতিটা মুহূর্ত নিজের মনের ভাব কে খুব সহজেই প্রকাশ করতে পারছি ? আমার কোনো জবাব নেই শুধু লজ্জায় মাথা নত করে চুপ করে থাকা ছাড়া।  

তারা জীবন দিয়ে গেল শুধু ভাষার জন্যে আর আমরা ? আমরা আজ প্রেমিকাকে ''আমি তোমাকে ভালবাসি'' বলার চেয়ে সাচ্ছন্দ বোধ করি হিন্দিতে ''ম্যায় তুমসে পেয়ার করতি হু'' বলতে। বৃথাই কি ছিল তাদের দেওয়া জীবন ? না কোনো দিন না। আমরা আমাদের মা কে ভালবাসি না বলে সবাই যে বাসে না তা কিন্তু না। আজও শত দামাল ছেলেরা রয়েছে যারা তাদের অন্তরের ভিতর থেকেই মাকে ভালবাসে। যাদের অন্তরে মায়ের জন্য রয়েছে অকৃত্তিম ভালবাসা তাদের মনের ভিতরেই জ্বলে দাউ দাউ করে আগুন।  সে আগুন শুধু তখনি প্রকাশ পায় যখন মায়ের কোনো অসন্মানি হয়। আজ আমরা যারা তরুণ তারা যেই উশৃঙ্খল জীবন যাপন করছি , আমরা যাদের মনে দেশ প্রেম অথবা দেশের প্রতি কোনো দায়িত্ব পালনে বিন্দু মাত্র গাত্রদাহ করছি না সেখানে আমাদের ঘরে জন্ম নেওয়া সন্তানরা কিভাবে ভালো হবে ?তারা যে আমাদের চেয়েও বেশি  উশৃঙ্খল হবে না তার কি নিশ্চয়তা ? 

আজ আমরাই আমাদের ভবিষ্যত বংশধরদের জন্য রেখে যাচ্ছি এক অন্ধকারাচ্ছন্ন অধ্যায়। তারা কোনোদিন জানবেনা কোনো ইতিহাস। সে জন্য দায়ী আমি। আমার সন্তানকে আমি কি শিখাবো যেখানে আমি নিজেই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা করতে জানি না। দেখা যাবে আমার সন্তান হবে আমর চেয়েও বড় উশৃঙ্খল যে কিনা শহীদদের তো দূরের কথা তার জন্মদাতা বাবা মাকেই শ্রদ্ধা করবে না। কিন্তু তার জন্য আমি আমার সন্তানকে দায়ী করব না। তার জন্য দায়ী আমি নিজে। 

তোমরা তোমাদের দায়িত্ব পালন করে গেছ আর আমাদের দিয়ে গেছ লজ্জায় নত শির। 

ভালবাসাপুর

বনীকরণ করো না এই মহাসৃষ্টি ভালবাসাপুরকে,
আজও শত বপ্তা বুনছে ফসলের বীজ এই পুরে।
বিশ্বাস দিয়ে গড়া বরফের উপত্যকা ছুয়েছে গগন ,
আজও মাঝি বজরা বেয়ে চলে ভাওয়ালি সুরে।

আজও পুষ্পাবতীর ঘরে লটকানো আছে রকমারি মালা,
শঙ্কিত করো না তাকে যে রয়েছে কারো অপেক্ষায়। 
ভালবাসাপুরের ভালবাসা কোনো শলাকা নয় ,
বিশ্বাসে নত হিংসার অনল, প্রেম আনে শিহরন জলন্ত শিখায়। 

রঙ্গমহল ছেড়ে এসো একবার এই ভালবাসাপুরে ,
বগলি ভরে নিয়ে এসো শুধু বিশ্বাস সংকুলান। 
আকড়ে ধর ধরা হাত ছেড়ে দিও না হয়ে বিস্মরণ ,
বিশ্বাসের নদীতে ভালোবাসা হয়ে রবে চির অম্লান। 

বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ধনকুবেরের অভাব

ধনকুবেরের অভাব দেখে আমার নিজেরই কষ্ট হয় ,
কচুরিপানার মত দ্রুতই বাড়ে তার অভাব।
আজকের সকালে খুব চিন্তিতদেখালো তাকে কিভাবে কি করবে ?
মতিঝিলের বাড়িতে এখনও নকশার কাজ বাকি।

গত বছরের কেনা গাড়িটাও হয়ে পরেছে অনেক পুরনো।
ছেলের যাবে সুইজারল্যান্ড ভ্রমণে আর মেয়ে কানাডায়।
ঘরের গিন্নি ধরেছে গহনার বায়না ,অভাব আর সড়ে না।
যেদিকে শুধু অভাব আর অভাব, কথাও তার শান্তি নাই।

পাশের বাড়ির দরিদ্রও তার পাওনা টাকা দিচ্ছে না।
সেই কবে নিলো তার মেয়ের বিয়ের সময় টাকাটা ,
এই অভাবের দিনে ৫ হাজার টাকাও অনেক।
হায়রে ধনকুবের তোমার অভাবে আমিও আজ অভাবী। 

মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কৃত্তিম মায়া

কেন ঘুরছ এই ঘরপোড়ার পিছে, নিয়ে মিথ্যে মায়ার ঝুড়ি ?
হাতের মাঝে তোমার পুষ্পবাণ , সারা বদন ঘর্মাক্ত। 
ধুপকাঠির সুভাস ছড়িয়ে করতে চাও শাসরুদ্ধ ,
কৃত্তিম ভালবাসার মোহে আমি নিজেকে হারাতে চাই না। 
যদি পার রৌদ্রজ্জল আকাশে ঘটাও পুষ্পবৃষ্টি। 

তোমার কালোকেশে ছড়াচ্ছে বিদঘুটে অন্ধকার ,
লাল লিপস্টিকেই বলে দিচ্ছে তুমি কোনো রক্ষনপুরীর। 
শীতল চঞ্চুতে নেই রক্তচোষা ছাড়া কোনো কামের দাগ। 
কৃত্তিম সৌন্দর্যে আমি হতে চাই না  দৃষ্টিক্ষুধার্ত,
যদি পার কাবিনবিহীন হাতে দাও দৃঢ়মূল বিশ্বাস।

তোমার লজ্জাহীন বসনে সবার দৃষ্টি আজ কাকচক্ষুর মত। 
আড় চোখে তাকানোর ভঙ্গিমাটা দেখে হাসি আসে অনেক,
তোমার কাঁকনের ঝঙ্কার শুনলে মনে হয়, তুমি নারী কাঁসারি। 
তোমারতো কোনো আচল নেই, কোথায় মুখ লুকাবো ?
যদি পার দাও মায়ের আচলের মত নিরাপদ আশ্রয়। 

তুমি জোত্স্না জোত্স্না বিলাপে আমাকে বধির করো না। 
কল্পিত জোত্স্নার মোহে আমাকে বধ করা যায় না। 
সাতার না জানা আত্মবিশ্বাসে বিশ্বাসী আমি,
শৈশবে কলমির ডগাকে আকড়ে ধরে বেচে গিয়েছিলাম। 
কল্যাণবতীকে আমি ঠিকই খুঁজে নিব শত কৃত্তিমতার ভিড়ে। 

রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

A DOCTOR

A doctor entered the hospital in hurry after being called in for an urgent surgery. He answered the call asap, changed his clothes & went directly to the surgery block.
He found the boy’s father pacing in the hall waiting for the doctor.
On seeing him, the dad yelled: “Why did you take all this time to come? Don’t you know that my son’s life is in danger? Don’t you have any sense of responsibility?”

The doctor smiled & said: “I am sorry, I wasn't in the hospital & I came as fast as I could after receiving the call…… And now, I wish you’d calm down so that I can do my work”

“Calm down?! What if your son was in this room right now, would you calm down? If your own son dies now what will you do??” said the father angrily
The doctor smiled again & replied: “I will say what Job said in the Holy Book “From dust we came & to dust we return, blessed be the name of God”. Doctors cannot prolong lives. Go & intercede for your son, we will do our best by God’s grace”
“Giving advises when we’re not concerned is so easy” Murmured the father.

The surgery took some hours after which the doctor went out happy, “Thank goodness!, your son is saved!” And without waiting for the father’s reply he carried on his way running. “If you have any questions, ask the nurse!!”

“Why is he so arrogant? He couldn't wait some minutes so that I ask about my son’s state” Commented the father when seeing the nurse minutes after the doctor left.

The nurse answered, tears coming down her face: “His son died yesterday in a road accident, he was at the burial when we called him for your son’s surgery. And now that he saved your son’s life, he left running to finish his son’s burial.”


MORAL: Never judge anyone….. Because you never know how their life is & what they’re going through”

শুভ জন্মদিন


আমার বন্ধু মাহমুদুল হাসান লিটনের জন্মদিনে আমার শুভেচ্ছা। 




তোমাকে আচমকা অবাক করতে পারব না
পারবনা সন্ধ্যার মৃদু আলোতে,বুকে জড়িয়ে বলতে,
হে প্রিয়, শুভ হোক তোমার জন্মদিন।
আকাংখা পূর্ণতা পেল না।

খোলে দাও ২৬ বছর ধরে বন্ধ থাকা সকল জানালা ,
আলো আসতে দাও, বয়ে যাও তোমার সাধনার তরী।
ভয় নেই তোমার, আমি রয়েছি দাড়িয়ে সদর দরজায়
হয়ে তোমার অতন্দ্র প্রহরী।

রয়েছি আমি কঠোর পাহারায় তোমার দরজায় ,
বন্ধ করেছি কষ্ট আসার সব অজানা পথ।
প্রতিনিয়ত তুমি বাচবে বাচার মত করে ,
কেউ ছুতে পারবেনা তোমাকে, রয়েছি আমি দশরথ।


কষ্টের যত শির আজও বেচে আছে ধরনীতে ,
সব শিরের আজ নত হবে মাথা।
প্রমান করে দাও তুমি শুধুই বাস্তব তুমি,
নয় কোনো গল্প উপন্যাসের রচিত কথা।

অন্ধকারে আর নয়, আলো আজ চারদিকে ,
শেষ হয়ে গেছে দুঃখের সব ঋণ।
দুবাইয়ের মরুভমির মাঝে দাড়িয়ে বলছি অস্পস্ট স্বরে ,
বয়ে যাও মাঝি শুভ হোক তোমার জন্মদিন।

শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আঘাত

আমি তোমাকে কখনো আঘাত করতে চাই না 
সেটা বড়ই নির্মম হবে,
সেই আঘাত তুমি সহ্য করতে পারতে না 
 জীবন্ত দেহ তোমার মৃত হয়ে রবে। 

তোমার ভয়ের আজ কিছুই নেই 
যখন আঘাতের বদলে পেলে মহত্ব, পেলে ক্ষমা,
কলম গড়ে তুলেছিল আমার বিবেককে 
আমার ক্লেশ আমার মাঝেই রাখলাম জমা। 

যখনি আঘাত করেছ বিশ্বাসের 
নিশ্চুপে হয়ে গেছে রক্তক্ষরণ,
ভাবতাম এটাই কি বিশ্বাসের মুল্য?
তুবও পাটকেল ছুড়িনি, সব করেছি বরণ। 

তোমারি আঘাতে জন্মনিলো আমার মনে আজ 
কবিতার লিখার মত নির্ভরশীল শিল্প ,
লিখে যাব সব চরণ জীবনের 
কবিতার মাঝেই জানবে সবাই এই জীবনের গল্প। 

কবিতা তোমার মত বিশাস নিয়ে খেলে না 
এখানে হয় না বিশ্বাসের মরণ ,
একদিন হয়ত তুমার মাঝে স্মৃতি  হব আমি 
কিন্ত বাকি সবাই কবিতার মাঝেই, করবে আমায় স্মরণ।

ক্রোধ আর আমার যদ্ধু

কেউই কি আজ আমার প্রতি ভীত না ,
ক্রুদ্ধে লাল হয়ে যাওয়া চোখগুলো দেখেও,
থমকে যাওয়া সেই দেয়াল ঘড়িটি
আজও  আমার ঘুম ভাঙ্গানোর গান গাইলো  না।

চিত্কার, চেচামেছি ,আর ছুড়ে ফেলা।

আমার ক্রুদ্ধতার বিজলী সেদিনই অকেজো হয়ে পরেছিল,
যেদিন বসত পরিবর্তনের বায়নাতে ক্রুদ্ধ হয়ে ,
আমি উপড়ে তুলেছিলামসকল পাখা , আমারই পোষা বিহঙ্গের।
যেকিনা সারাটাক্ষণ  বলত আমারই শিখানো সব বুলি।

ছেড়া  পালক , উড়ার আকাংখা, বুকে ভর করে চলে যাওয়া।

হেরে যাই বশে না আসা ক্রোধের কাছে অবিরাম ,
রক্তচোখ শীতল হয় যখন,
তখন দেখি নিস্তব্ধতা ঘেরা পৃথিবী।
তখনি আবার ভাবি, ভাবতে হয় ক্রুধের সকল কারণকে,
আশা ভঙ্গের প্রতিফলন ছাড়া আর কোনো কারণ খোজে পাই না।
কোথায় গেল সব কারণগুলো? কেন আমি খোজে পাই না ?

আবার প্রশ্ন , আবার ক্রোধ , আবার কবিতার খাতায় আর একটি কবিতার জন্ম।

রাজহংসী

এটাই তো সেই স্থান ,
যদিও পুকুরটা আর এখন নেই। 
ভরাট করে হয়েছে মস্ত বাগানবাড়ি,
গতকালের সব স্মৃতির মত 
এখনো সেই সৃতিগুলো আমার মস্তিষ্কে প্রখর ,
যদিও কালের বিবর্তনে  দিয়েছি পঁচিশ বছর পাড়ি। 

আজকাল আমার শ্রবণ শক্তি আর আগের মত কাজ করে না,
কাছের শব্দগুলোও ভালোভাবে শুনতে পাই না। 
আমার শ্রবণ ইন্দ্রিয়তে যেন সেই অট্টহাসির দখলে আজও।  
যে হাসি  হেসেছিল এক রাজহংসী ,
পিচ্ছিল এই ঘটে আমার হোচট খাওয়া দেখে। 

সেই হাসিই আমাকে নিয়ে গেল আরেকটি রাতের কাছে। 
হয়েগেলাম রাজহংস,
কাটলাম সাতার দুজন একই পুকুরে। 
সবই যেন আজও  জীবন্ত পঁচিশ বছর পরেও ,
আরো পঁচিশ  বছর হয়ত চলে যাবে,
তবে জীবন্ত থাকবে সেই স্মৃতি চৈত্রের দুপুরের। 

 দুপুরবেলা খরা রোদে রাজহংসী উড়তে চাইল ,
সাতার নাকি আর তার সাথে মানে না। 
ইচ্ছা পরিবর্তনের কাছে হেরে গেলাম ডানা কাটা আমি। 
উড়ে গেলো রাজহংসী , চেয়ে চেয়ে দেখলাম , গন্তব্য জানিনা। 

ছাপ

আমার যত দূর্বলতাছিল রাতের আঁধারে,
কালো আঁধারে বাধা পেত আমার স্বপন।  
অপলক  তাকিয়ে থাকা আলোর খোঁজে,
হঠাৎ পাখী ডাকে নেমে আসে ভোর,
শেষ হত আমার নির্ঘুম রাত্রি যাপন। 

 খুব বেশি ভর করে ফেলেছিলাম তিতাসের উপর,
ভাসমান তিতাসের স্রোতের কল কল ধ্বনি 
এনে দিতো স্বপ্ন হাজার। 
পরিশুষ্ক বক্ষে আজ আর কোনো সুর ভাসে না,
তবুও বিশ্বাস রয়ে যায় অমর, বয়ে আনে শক্তি-
নতুন স্বপ্ন বোনার। 

তখন বুকটা ছিল নরম কাদামাটির মত,
অহরাত্রিতে যখন খুশি বসিয়েছিলো অনয়াসে ,
উদ্ধত আঙুলের ছাপ। 
শুকিয়ে গেছে মাটি,ছাপ রয়ে গেছে চিরস্থায়ী,
তাকিয়ে থাকি আজও সেই নিভু আলোর দিকে
যেটাই ছিল জীবনের বড় পাপ। 

শক্ত হয়ে যাওয়া আমার এই মাটির বুকে 
এখন আর কোনো ছাপ পরে না,
কারো বিশ্বাসের ছাপ  নিতে আমিও রাজি না। 
অন্ধকারেই কাটাই নিশি, নির্ঘুম স্বপ্নবিহীন,
তবুও সেই বিষাক্ত ছাপের ধার ধারি না।

কৃতজ্ঞতা

তোমার দরবারে আজ জ্ঞাপন করছি কৃতজ্ঞতা ,
হে মহান সৃষ্টিকর্তা ,করি তোমারি জয় জয়কার। 
মোর জীবনের  রাতের অন্ধকার দূর করে তুমি দিলে,
দিলে সুযোগ একটি বৃষ্টিস্নাত একটি শুভসকাল দেখার। 

কিভাবে ভুলবো তোমার পরম দয়ার কথা ? 
বৃষ্টি দিয়ে সরিয়ে দিলে জীবনের কাল মেঘ যত। 
হৃদয়ের মাঝে কষ্ট নিয়ে বেচেছিলাম অনেকদিন ,
আজ সকালের আলোয় দূর হলো ছিল যত ক্ষত। 

হে প্রভু , হে সৃষ্টিকর্তা, হে মোর আল্লাহ ,
শক্তি দিও এই সুখকে যাতে রাখতে পারি ধরে। 
করছি আকুতি নিওনা কেড়ে তাকে ,
যে এসেছে আবার মোর  জীবনে ফিরে। 

আজ কোনো কিছুর অপূর্ণতা নেই আমার জীবনে। 
ফিরিয়ে দিলে তাকে এতদিন যার অপেক্ষায় ছিলাম।
আবার সুর এলো আমার প্রিয় বীণায় ,
অতীতকে পিছনে ফেলে সামনে পা বাড়ালাম।  

এলোমেলো সংসার

ঘর , দোর , বিছানা সবই আজ এলোমেলো ,
ফুলদানিটাও নেই এখন টেবিলের উপরে।
ড্রেসিং টেবিলের গ্লাসটা রেগে ভেঙ্গে ফেলেছি আমি,
সবই করেছি যেদিন অভিমানে তুমি গেলে সরে।

তুমি একদম ভালো না, কিছুই বোঝনা ,
আমি কি পারি বল এতবড় দুজনের সংসার একা সামলাতে?
কতনা আকুতি , মিনতি আমার, তারপরও গেলে,
ফিরে যখন এসেছ সংসারে আর দিব না পালাতে।

সেই পুরনো সংসারকে আবার তোমাকেই গোছাতে হবে ,
জানইতো তুমি, আমি এসব একদম পারি না করতে।
তুমি চলে যাওয়ার পর নষ্ট জীবন করেছি কিছুদিন ,
ডেকেছি তোমাকে ,সাড়া না পেয়ে চেয়েছি মরতে।

ঘরটাকে ঠিক আগের মত  গোছিয়ে তোলো ,
সাথে ঝেড়ে ফেলে দিও পুরনো সব অতীতকে।
সংসারে তুমি মহারানী আর আমি হব মশাই ,
দুজন মিলেই করব বরণ গর্ভে থাকা প্রধান অতিথিকে। 

সান্তনা

কতটা অসহায় হয়ে আজ ডাকি চারপাশে
কেউ কি আছ এই ধরনীর বুকে ?
স্বগৃহটিও আমাকে প্রত্যাখান করলো ,
নিরুপায় আমি আজ কোথায় যাব ?কি খাব ?

আজ কোনো সান্তনায় আসায় চিত্কার করছি না,
ভিক্ষার থালা হাতে নিয়ে কেউ  সান্তনা চায় না।
সামনে এগিয়ে যাও তোমার  পিপাসা দূর হবে ,
তৃষ্ণার্ত আমি পেয়েছি এমন হাজার লোকের সান্তনা।

শত কোটি মানুষের আবাসস্থল এই পৃথিবী ,
লক্ষ্য মানুষের পদচারণে দৌড়াতে চাইলেও পারিনা।
পগলা কুকুরের মত দৌড়াতে চাই আমি ভিড়ের মাঝে ,
পাই না আমি পাই না , আমি কারো না।

পৃথিবীর কাউকে ঘৃনা করার স্পর্ধা আমার না ,
সবাইতো কারো না কারো অপেক্ষায়।
আমি আজ নিঃস্ব বলে সবাইতো আর নিঃস্ব না ,
তাই থাকলাম না আর এই অযোগ্যতা নিয়ে তোমাদের সমাজে।

টিকেট কেটে এসেছি নদীর ওই পাড়ে যাওয়ার।
এখন শুধু অপেক্ষা সেই খেয়ার মাঝির ,
খানিকের যে আমাকে পার করে দিবে ওপারে ,
ওপারে সবই পাব, শুধু পাব না তোমাদের মিথ্যে সান্তনা।

না বর্ষার কবিতা

আমি এখন আর আষাঢ় শ্রাবনের কোনো পিছুটানে নেই
ভালবাসার কফিন ধরে যে কবে শেষ কেদেছিলাম তাও ঠিক মনে নেই।
বুঝতেই পারছ, এখন কারো কোনো খুঁজে
আমার বিশেষ কোনো প্রয়োজন নেই,
কার ঘরে অথবা কোন প্রহরে কে টোকা দিয়ে যায়,
দূরে বসে কে বজায় বাশী যেই বাশীর সুর আমারও খুব প্রিয় ছিল ,
এসবে এখন আমার কিচ্ছু যায় আসে না।

আমি যেহেতু আর কাউকে ভালবাসি না সেহেতু ,
কার চোখের জল নদীর পানির সাথে মিশে গেল, অথবা
কে ভালবাসার জন্য আরেকবার ঝাপিয়ে পরল কর্ণফুলীতে,
তাতে আমার গন্ডারের চামড়ায় একটি ফুস্কাও পরবেনা।

আমি যেহেতু আর মেঘ বৃষ্টির ধারে কাছেও নেই সেহেতু ,
কে বৃষ্টিতে ভিজে ১০৪ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে বিছানায় পরে আছে
তাতে আমার বিন্দুমাত্র সহানুভুতি হবে না।
কারো মাথার উপরে যদি আকাশ ভাঙ্গতে থাকে
তাতেই বা আমার কি আসে যায়? কারণ
আমার অভিধান থেকে চার অক্ষরের শব্দটা মুছে ফেলেছি।

এখন কোনো শ্রাবনের বনে অথবা আষাঢ়ের স্বরে
আমাকে কেউ খোজে পাবে না।
ভালবাসা আমাকে বড় বাঁচিয়ে দিয়েছগো।
এখন আর মাঝ রাতে ঘুমের ঘোরে চিত্কার করে উঠিনা।

তবে মিথ্যে বলব না, বৃষ্টির দিনে রবীন্দ্র সংগীতের সাথে ,
বাহিরে যখন জলতরঙ্গ সৃষ্টি হবে,
তোমাকে আমার অনেক মনে পরবে।
তবে আমি সেদিকে যাবনা, কথামুড়ি দিয়ে তখন
বিরহীর ঘুম একাই ঘুমাবো।
মা ,দিদি মা কেউই আর সেই ঘুম ভাঙ্গতে পারবে না।

কারো কোনো কষ্টেই এখন আমার কিছু যায় আসে না।
তবে হা ভালবাসার বাজারে এখন অনেক আগুন , যদি শুনি
সেই আগুনে কেউ পুড়ে পুড়ে মরিয়া হয়ে গেছে ,
একের পর এক ব্যাংক লোন  নিয়ে কেউ ডিফ্ল্টার হয়ে পরেছে,
তাকে জানিয়ে দিও তার পরবর্তী ব্যাংক লোন গেরান্টি হতে
আমি বিনা বাক্যব্যায়ে রাজি।

আমি নিজেই হব তার ব্যাংক লোনের নিশ্চয়তা দানকারী ,
শর্ত শুধু একটাই--
কোনো ছলেই মনের ঘরে জং ধরে যাওয়ার তালাটাকে খোলা চলবে না।
বর্ষার তুচ্ছ
কদম্বের ছল ছুতোয় তো নয়ই। 

কেন এমন হয়?

কিভাবে তোমার পথরোধ করে দাড়াব
দারিদ্রতার শেকড়ে জড়িয়ে গেছে আমার পা।
নির্লজ্জ ভঙ্গিতে বারবার সিক্ত হয় নয়ন
দূরে থেকে দাড়িয়ে দেখি তুমি বাধছ খোপা।

বেদনার নীল কালিতে সাক্ষর করা
তোমার তালাকনামা পেলাম এই দুর্যোগের ভোরে।
আমি আর কোনো দলিলেই দিব না টিপসই,
যদি পর কাবিননামা ফেল ছিড়ে।

আজ কাবিনবিহীন তোমার এই দুটি হাত ,
ধীরে ধীরে মুছে যাবে মেহেদির লাল  রং।
আমি প্রত্যাবর্তন করব সেই হারানো দিনে,
যেখানে হাসব একা, কাদব একা ,মাঝে মাঝে সাজবো সং।

হামাগুড়ি দিয়ে চলতে হারিয়েছি বুকের পশম ,
এই বুকে আর কোনো বৃক্ষের জন্ম হবে না জানি।
নিশাচর হয়ে শুধু ভাবি, কেন এমন হয় বারবার ?
কেন বারবার শুকিয়ে যাই পান্তা ভাতের পানি ?

ভালবাসা দিবস ও কালো গোলাপ


লাল , নীল , হলুদ কোনো গোলাপই পেলাম না 
ভালবাসা দিবসটাও অনেক সন্নিকটে,
সব নার্সারী আজ ভরা কালো গোলাপে,
রঙের অধিক মিশ্রনের প্রতিফলনে 
পরলাম লাল গোলাপের সংকটে। 

সবাই কেমন জানি উন্মাদ লাল গোলাপের খোজে ,
সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মিকে উপেক্ষা করেই 
খোঁজছে বিলুপ্ত লাল গোলাপকে।  
আমিও ফিরে আসি ব্যার্থ হয়ে পুরোনো গলিতে ,
তুলে দেই তার হাতে বসন্তের  কৃষ্ণচূড়াকে। 

আজ সূর্য উঠেছে বিশ্ব ভালবাসা দিবসের,
যদিও দেখা নেই কোথাও একটি গোলাপের। 
বসন্তের ফুল আমাকে বাঁচিয়ে দিল 
রঙের প্রতিফলন আজও তাকে গ্রাস করেনি ,
পেলনা কোনো ছোবল বিষাক্ত সর্পের। 

নদীর কূল ধরে হেটে যাচ্ছি, নিরবতা দুজনেরই  
দূরের নদীর স্রোতে করছে দুটি হৃদয় খেলা। 
তার স্রোতে মুগ্ধ হয়ে ভাবি 
সেদিন কেন ছিল না তার এই ঢেউয়ের খেলা,
যেদিন আমি প্রথম এসেছিলাম একলা?

ভালবাসার এই দিবসে আরো কিছু 
প্রেমিক যুগল এসে জুড়েছে এই তীরে। 
নিরবতার মাঝেই হচ্ছে শত আলাপন ,
সবার চোখ যেন বলে দিচ্ছে অজস্র আকাঙ্খা 
জানি ভালবাসা খুব কষ্টের শত কালো গোলাপের ভীড়ে। 

কারো কাছেই কোনো প্রতুত্তর নেই 
কেন লাল গোলাপে এই রঙের মিশ্রন আজ ?
কেন নেই নদীর তীরে শত যুগলের ভিড় ?
কেন একটি ভোরই হয় ভালবাসা দিবস ?
কেন এলোমেলো হয় খোলা আকাশের নিচে 
নারীর কালো কেশ, শরীরের বসনের ভাজ?

গোলাপ তুমি যথার্থই রূপ নিলে 
ভালবাসার মাঝে ঢেকে দিলে শোকের কালো ছাপ। 
যদি ভালবাসা দিবস বাড়ায় কামের আগুন ,যদি 
ঝোপের আড়ালেই বসে শত মেলা,
তবে এই দিবসের সূর্য উঠাই পাপ। 

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

মাহমুদল হাসান লিটন

বন্ধুত্ব, ভালবাসা এসবের সংজ্ঞা দেওয়া আমার কাজ নয়। আর এসব শব্দের সংজ্ঞা দেওয়া আমার পক্ষেও সম্ভব না। এই দায়িত্ব তাদের, যাদের কালজয়ী লেখনী পড়ে আমিও আজ আমার বন্ধু সম্পর্কে কিছু লিখতে অনুপ্রেরণা পেয়েছি। 

 মাহমুদল হাসান লিটন, আমার জীবনের একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আমার এই লেখায় তাকে বন্ধু বলে আখ্যায়িত করতে চাই না কারণ আজ পর্যন্ত কখনো তাকে সরাসরি বন্ধু বলে ডাকা হয়নি। কখনো গালাগালি, কখনো মামা আবার কখনো তার কোনো ব্যঙ্গ নামেই তাকে ডাকা হত। সেই স্কুল জীবন থেকে শুরু করে আজও সে আমার সাথে রয়েছে সবসময়। কেমন জানি এক সভাব তার মাঝে। তার সভাবের কারণেই হয়তো আমার মনের প্রিয় মানুষটির জায়গাটা শুধু তার জন্য বরাদ্ধ। আমার জীবনের অনেকটা সময় তার সাথে কেটে গেছে আর এখনো যাচ্ছে এবং মনে হচ্ছে চলে যাবে ওর সাথেই সারাটাজীবন। আমাদের দুজনের জন্মতারিখ থেকে শুরু করে অনেক দিকেই যেন মিল রয়েছে। কেন জানি আমার চাহিদা খুব সহজেই সে পারে। আজ তাকে ফেলে আমি একা সম্পূর্ণ একা একজন মানুষ। 

আমি আজ ৪ বছর ধরে প্রবাসে রয়েছি। প্রবাস জীবনের সকাল, বিকাল,সন্ধ্যা,রাত সবই আমাদের কাছে একই সমান কাটে। মফস্বলের বখাটে চঞ্চল ছেলেটিও আজ চুপচাপ জীবন কাটায় আর এটা যেন প্রবাস জীবনের ধর্ম। কাজ শেষ করে এসে ঘুমানো আবার ঘুম থেকে উঠেই আবার কাজে যাওয়া এই সূত্রে কোলে যাচ্ছে জীবন মানে আমার প্রবাস জীবন। যখন হাপিয়ে উঠি এই জীবন নিয়ে , যখন ইচ্ছে করে সব ফেলে চলে যায় আবার সেই পুরনো জীবনে তখন কি করি জানেন? হা হা হা কিছুই না। বাধ্য হয়ে সবকিছুকে ভুলে যেতে হয় কারণ পিছুটান রয়েছে কিছু জীবনে আমার। 

এই হলো আমাদের সংক্ষিপ্ত পরিচয়। আজকে লিখাটার মূল উদ্দেশ্য হলো তার প্রতি আমার কিছু ক্ষোভ প্রকাশ করা। আমার এই প্রবাস জীবনে আমি শুধু এই মাহমুদুল হাসান লিটনকে পেয়েছি আমার পাশে। কেমন জানি একটা উদ্ভট অভিনেতা সে। মাঝে মাঝে যখন খুব খারাপ লাগে তখন তাকে বলি মনের দুঃখের কথা তখন সে আমার কোনো কথারই মুল্য দেয় না আমি যখন দুঃখের কথা বলি তখন সে হাসে। হেসে হেসে বলে এমন কিছু কথা বলবে যা তখনের জন্য কষ্টটা ভোলে যেতে আমি বাধ্য হয়ে যাই। আবার সুখের সংবাদ দেওয়ার পর তার মুখে হাসি থাকে না। 

কিছুদিন আগে একদিন রাতে তাকে বললাম যে আমি প্রমোশন পেতে যাচ্ছি তখন সে আমাকে কিছু বলল না যেখানে সে আমার কষ্ট শুনে আমার সাথে হাসি মুখে কথা বলে আজ সে আমার খুশির সংবাদ শুনে চুপ করে থাকাতে আমি অবাক না হয়ে পারলাম না। পরক্ষনেই বোঝতে পারলাম সে কাদছে , কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর আমাকে সে বলল " মামা তুমি ভালো আছ শুনলে আমার খুব ভালো লাগে , তোমার খুশির সংবাদ শুনে কেন জানি চোখ দিয়ে পানি চলে আসল না কেদে আর পারলাম না " এই হলো মাহমুদুল হাসান লিটন। আমার এই মানুষটার জন্য আমি মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি তাকে আমার জীবনে দেওয়ার জন্য। 

সেই মাহমুদুল হাসানের আর একটা কথা বলে আজকে শেষ করতে চাই। 

গতসপ্তাহে একদিন নিজেকে খুব উচ্ছল মনে হলো ,মনে হলো প্রবাসে থাকলেও আজ আমার কোনো দুঃখ নেই। ফিরে পেলাম সেই মানুষটিকে যেই আমি ছিলাম পূর্বে। সেদিন যেন আসলেই অন্যান্য দিনের চেয়ে আলাদা ছিল। ভাবছিলাম আজকের দিনে তাকে খুব দরকার কারণ তার সাথে ভালোভাবে তেমন কোনো কথা হয় না। ঠিক এমন সময় আমি ডাকার আগেই যেন সে আমার কাছে আসলো তখন মনে হলো দুবাই থেকে বাংলাদেশের দুরত্ব ৫০০০ মাইল হলেও তার আর আমার বসবাস যেন একই বৃক্ষের নিচে। শেয়ার করলাম তার সাথে যে আমি আজ অনেক খুশি। কথা বলতে বলতে হঠাৎ তাকে জিগ্ঘেশ করলাম আচ্ছা মামা আজকে আমার এত খুশি লাগছে কেন ? সে আমাকে বলল এই ভাবে ""একাকিত্বের সাথে বসবাস করার কারণে আজকে তোমার এই চঞ্চলতা। মনের মাঝে চঞ্চলতা গুলো পুষে রাখতে রাখতে হাপিয়ে ওঠার কারণে আজকে মনের ভিতর চেপে রাখা কষ্টগুলোর প্রতিফলন এগুলো। তখন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলাম তার চিরন্তন সত্য মেসেজটার দিকে আর মনে মনে বললাম হায়রে পৃথিবী আমার পাশে এমন শত মানুষ আছে যাদের কারো আমার দরকার নেই আর যার জন্য আমার বেছে থাকা তাকে রেখেছ আমার কাছ থেকে অনেক দূরে।

মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভালবাসা দিবসের উপহার

১৪ই ফেব্রুয়ারী, বিশ্ব ভালবাসা দিবস। অনেকেই উদগ্রীব হয়ে আছেন এই দিনটিকে পালন করার জন্য। অনেকেই হয়ত ভালবাসার মানুষটিকে উপহার দেওয়া ভাবছেন। আসুন জেনে নেই কি  হতে পারে ভালবাসার মানুষের জন্য এই দিনটির উপহার।

একগুচ্ছ ফুল:
ফুলকে ভালবাসেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে এই পৃথিবীতে। সবাই কমবেশী ফুলকে ভালবাসে। আর এই ফুল দুজনের ভালবাসার মাঝে আরো সুগন্ধী আরও বাড়িয়ে দেয়। যাকে ভালবাসেন আপনি তাকে এই ফুলের মাঝেই বরণ করে নিন এই ভালবাসা দিবসে। ফুল যেন পবিত্র ভালোবাসাকে আরো পবিত্র করে তোলে। তাই এই ফুলই হোক আপনার জীবন সঙ্গিনীর জন্য প্রথম উপহার। 

বই:
আপনি আপনার ভালবাসার মানুষটিকে দিতে পারেন তার পছন্দ অনুযায়ী কোনো বই। ভালবাসা দিবসের আগেই জেনে নিন কোন ধরনের বই তার পছন্দ এবং সেই দিন তাকে তার পছন্দের বইটি উপহার হিসেবে দিন। কখনো নিজের পছন্দের বই কিনে তাকে দিবেন না কারণ আপনি স্ট্রবেরী পছন্দ করলেও ওই স্ট্রবেরী দিয়ে কিন্তু মাছ ধরা যায় না। বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে চাইলে তাকে তার পছন্দের খাবারটি দিতে হবে।

গহনা:
কম দামী হোক আর বেশি দামের হোক ওই দিন ভালবাসার মানুষকে গহনা জাতীয় কিছু উপহার দিতে পারেন। গলার অথবা কানের গহনা অথবা হাতের ব্রেসলেট দিতে পারেন। তবে কিনার সময় অবশ্যই আপনার ভালবাসার মানুষটির সাথে যাতে মানানসই হয় তা ভেবে কিনবেন আর এই ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার কল্পনা শক্তি ব্যাবহার করতে হবে। আপনিই পারবেন আপনার ভালবাসার মানুষটিকে কল্পনায় ফুটিয়ে তুলতে।

প্রতিজ্ঞা  / শপথ:
শপথ ? হয়ত ভাবছেন এটা আবার কোন ধরনের উপহার ? বিশেষ করে উপরের উল্লেখিত উপহারগুলো হয়ে থাকে শুধু শুভেচ্ছা আদান প্রদানের জন্য। একজন ভালবাসার মানুষের জন্য শপথের চেয়ে আর কোনো বড় উপহার থাকতে পারে না। শপথ করার আগে ভেবে নিন আজ ভালবাসার মানুষ হিসেবে যে আপনার পাশে অবস্থান করেছে সে এই বিশেষ দিনে অন্যকারো সাথেও হয়ত থাকতে পারত। আপনাকে সে ভালবাসে বিধায় সে চায় আপনার সাথেই আজকেই এই দিনটাকে কাটানোর জন্য। সে যদি আপনাকে ভালোনাবাসতো তাহলে আজকে কোনভাবেই সে আপনার সাথে দেখা করতে আসত না। কোনো না কোনো বাহানায় থেকে যেত আপনার কাছ থেকে দূরে। সে আপনাকে সত্যি ভালবাসে বিধায় আজ আপানর পাশে সে দাড়িয়ে রয়েছে। তার চোখের চাহনিতে রয়েছে ভালবাসার বয়ে যাওয়া একটি নদী আর সেই নদীতে একসাথে সাতার কাটার স্বপ্নে আজ বিভোর সে। তাহলে কেন আপনি তার কাছে শপথ করতে পারবেন না ? যদি সত্যি তাকে ভালবেসে থাকেন তাহলে ভালবাসা দিবসের এই দিনে তার কোমল দুটি হাতের উপর হাত রেখে শপথ করুন তাকে কোনো দিন না ছেড়ে যাবার। শপথ করুন তাকে কোনো কষ্ট না দেবার। শপথ করুন তার সাথে কোনদিন বিশ্বাসঘাতকতা না করার। ভেবে দেখবেন একবার এই দিনে, সত্যি আপনি তাকে ভালবাসেন কিনা ?যদি ভালবাসেন তাকে উপহার দিন আপনার শপথ। আপনার ভালবাসার মানুষ যদি আপনাকে সত্যি ভালবাসে তাহেল আজকের দিনে আপনার এই শপথ আপনাদের ভালবাসায় নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে। 

যদি আপনার ভালবাসার মানুষটার সাথে শপথ করতে আপনি দ্বিধাবোধ করেন তাহলে তার সাথে কোনো শপথ করার দরকার নেই।  এবার আপনি শপথ করবেন আপনার নিজের সাথে যে ভালবাসার নামে কোনো খেলায় আপনি আর কোনদিন নিজেকে খেলোয়ার ভাববেন না। শুধু এটা ভাববেন যে আপনি ভালবাসার নামে যে খেলা খেলছেন অন্যজনের সাথে, অপরদিকে সে কিন্তু সাজিয়ে ফেলেছে আপনাকে নিয়ে তার পৃথিবী। তার সেই স্বপ্ন যখন আপনার খেলার কারণে ভেঙ্গে যাবে তখন তার পৃথিবীটা হয়ে পরবে শূন্য।  একটি স্বপ্ন ভাঙ্গা মানুষের জীবনের যন্ত্রণা মৃত্যুর যন্ত্রণার চেয়েও ভয়ংকর। তার জীবনের তখন আর কিছুই বাকি থাকে না। 

তাই ভালবাসার মানুষকে যদি কেউ কোনো উপহার দিতে চান এই দিনে তাহলে এই শপথের চেয়ে মূল্যবান কিছু হয়ত আর নেই। সবার ভালবাসা সুন্দর এবং সার্থক হোক। এই কামনা রইল। 

বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

জরুরিভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি




আমি খুব ভালো করেই জানি আমার এই লেখাটা প্রধানমন্ত্রী অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নজরে আসবে না। ভুলেও যদি কখনো চলে আসে তাহলে  দয়া করে এড়িয়ে যাবেন না। গতকালের  প্রায় প্রত্যেকটা সংবাদপত্রে  ইউএই এর ভিসা বন্ধের সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। তারই কিছু কথা  নিয়ে আমার এই লিখা।


২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইউএই বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে রক্ষণশীল নীতি গ্রহণ করে। সেই রক্ষনশীলতার নীতি গ্রহণ করার পর গত সপ্তাহে ইউএই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সবধরনের ভিসা বন্ধ করে দেয়। কর্মসংস্থান বা এমপ্লয়মেন্ট ভিসা, ট্যুরিস্ট বা ভ্রমণ ভিসা এবং সব ধরনের বাণিজ্যিক ভিসা প্রদান সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দিয়েছে। সেপ্টেম্বর ২০১২ থেকে আজ পর্যন্ত দেড় বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও ইউএই সাথে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী অথবা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো আলোচনা হয়নি। কিন্তু কেন?

মাফ করবেন আমাকে, আমি আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর চাই না। জাহাজের খবর  আপনারাই ভালো জানেন আমাদের চেয়ে। আমি না হয় আদার ব্যাপারী এতকিছু জানি না কিন্তু আপনারা  যখন দেশ চালান তখন আপনাদেরতো আর মনে করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয় না যে রেমিট্যান্স আয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস এই ইউএই। নিজে বাঁচিনা আবার বাপের নাম। রেমিটেন্সের আয় কমে যাবে সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যাথা নাই কারণ আগে নিজের পেটে ও নিজের ফ্যামিলির পেটে আহার দিয়ে তারপর 

আসবে রেমিটেন্স নিয়ে চিন্তা ভাবনা। সৌদিআরবের পর এই দেশটি  হচ্ছে রেমিটেন্স আয়ের দ্বিতীয় উত্স। কিন্তু গত দেড় বছর হয়েগেল আমাদের বাংলাদেশীদের জন্য কোনো নুতুন ভিসা প্রদান করা হচ্ছে না। আপনাদের কি এটা দায়িত্বের মাঝে পরে না একটি আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসা? কেন শুধু একটু আলোচনার অভাবে আজ বিপন্ন বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ্য মানুষ ? আপনাদের একটু আলোচনার মাঝেই সম্ভব হত এর একটি সুষ্ঠ সমাধান। কিন্তু আজ আমাদের ভাগ্যকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে আল্লাহর উপর। 



বর্তমানে এই দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মোট ২৩ লক্ষ্য বাঙালির বসবাস। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কেই বলছি যে আপনারা জানেন কিনা জানিনা তবে যারা এই প্রবাসে আছি তাদের একেক জনের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তাদের পরিবারটি। আমরা যারা প্রবাসে আছি, কারো যদি তাদের পরিবারে দুরাবস্থা না থাকত তাহলে আমরা কেউ দেশ ছেড়ে এই প্রবাসে পরে থাকতাম না। রোদ ,বৃষ্টি ,তুফান সব মাথায় নিয়েই কাজ করে যাই শুধু নিজের পরিবারের মুখে  ফোটানোর জন্য। বিশ্বাস করুন কারো যদি পিছুটান না থাকত তাহলে আমাদের কে কেউ এখানে আটকে  পারত না। সকল নির্যাতন আমরা মুখবুঝে সহ্য করে যাই। আমাদের এখানে দিন রাতের কোনো ব্যাবধান নেই সবই সমান। আপনারা কি একবারও ভেবেছিলেন যে এই ২৩ লক্ষ্য প্রবাসী শ্রমিকের মুখের দিকে তাকিয়ে রয়েছে তাদের ৪ থেকে ৫ জন সদস্য দ্বারা গঠিত প্রতেকটি পরিবার? হিসাব করে দেখুন দয়া করে এই ২৩ লক্ষ প্রবাসীর জন্য ক্ষতির মুখে পরেছে তাদের সব পরিবার। সবাইকে মিলিয়ে যার মোট সংখ্যা হবে  প্রায় ১ কোটি ১৫ লক্ষ্য মানুষ। আমরা শুধু শ্রমিকরাই এখানে থাকি না এখানে অনেকে প্রতিষ্টিত করেছেন অনেক ব্যাবসা বাণিজ্য। এখনো সময় আছে চোখ খোলে তাকান আমাদের দিকে। 


কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ থাকা এ দেশের দরজা এখন বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য একেবারেই বন্ধ। এখানে অবস্থানকারী বাংলাদেশীদের ভবিষ্যত কি হবে কেউই তা বলতে পারে না। ভিসা নবায়ন ও আনুষঙ্গিক কাজে সৃষ্টি হয়েছে এই বৈরী আবহওয়া। ধরপাকড় চলছে সবখানে। এসব সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে হা সমাধানের কোনো পদক্ষেপ না নিলেও নিয়েছেন আমাদেরকে আরো নির্যাতিত করে রাখার পদক্ষেপ। তাই  বলতে বাধ্য হচ্ছি যে আজকে আমাদের এই এক কোটি মানুষের জীবন নিয়ে খেলছেন আপনারা। আপনাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই আজ আমাদের প্রবাসীদের এই অবস্থা। 

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে ভিসা প্রদানে রক্ষনশীল নীতি গ্রহণ করলেও আমাদের প্রবাসীদের আশা ছিল সরকার  একটি আলোচনার মাধ্যমে তার একটা সমাধান করবে কিন্তু আমাদের সরকার তা না করে সমস্যাটা আরও জটিল করে তুলল। সঙ্কটের শুরু মূলত ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর ভেন্যু নির্বাচনের ভোট দেয়াকে ঘিরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনীর আয়োজক হওয়ার প্রতিযোগিতায় ছিল বেশ কয়েকটি দেশ। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, তুরস্কের ইজমির, ব্রাজিলের সাও পাওলো, রাশিয়ার একাতেরিনবার্গ ও থাইল্যান্ডের একটি শহর। এর মধ্যে প্রার্থিতার শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় থাইল্যান্ড প্রাথমিক পর্যায়েই বাদ পড়ে। প্রতিযোগিতায় থাকা দেশগুলোর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের ভোটের ব্যাপারে সবচেয়ে আশাবাদী ছিল দুবাই। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেয়া হয়, এ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ভোট পাবে রাশিয়ার একাতেরিনবার্গ । ২৬শে নভেম্বর ২০১৩, প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ব্যুরোর ১৫৪তম সাধারণ অধিবেশন। সেখানেই ভোটাভুটির মাধ্যমে ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর স্বাগতিক দেশের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশ ভোট দেয় রাশিয়ার একাতেরিনবার্গের পক্ষে। তবে শেষ পর্যন্ত গোপন ভোটাভুটিতে জিতে ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর স্বাগতিক শহর নির্বাচিত হয় দুবাই। যার নুন খেতে হয় তার গুন গাইতে হয়। বাংলাদেশ সরকার যখন দুবাইকে এড়িয়ে রাশিয়াকে ভোট দিবে আর শেষ পর্যন্ত ফলাফল যখন দুবাইয়ের পক্ষে হয় তখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাংলাদেশীদের ভিসা বন্ধ করে দেওয়ার পিছনে যথাযুক্ত কারণ থাকবেই। সরকারের হঠকারিতার কারণে ইউএইতে থাকা লাখ লাখ বাংলাদেশী এখন ভাগ্য বিপর্যয়ের মুখে। অথচ ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর স্বাগতিক দেশ হিসেবে দুবাইকে সমর্থন দেয়ায় নেপাল ৩ লাখ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ পাচ্ছে। দুবাইকে সমর্থন দিয়ে বাংলাদেশও এর চেয়ে বেশি সুযোগ নিতে পারতো। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের সরকার সে পথে অগ্রসর হয়নি। সমাধানতো করলেন না বরং ঠেলে দিলেন ২৩ লক্ষ পরিবারকে অনিশ্চয়তার দিকে। আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়ে আর পারলাম না। 


তবে একটা কথা খেয়াল রাখবেন আপনাদের আলোচনাই পারত একটি সমাধানের পথ বের করতে। আপনার আলোচনার অভাবে যখন এতগুলো মানুষের জীবন বিপন্ন হতে যাচ্ছে ভাববেন না এর দায় আপনাকেই নিতে হবে। তাই এখনো আপনার কাছে সবিনয় নিবেদন জানাচ্ছি যে চেয়ারে যখন বসছেন দয়া করে সেই চেয়ারটি ছেড়ে একবার এখানে এসে  দেখুন আমরা কত কষ্ট করে বেছে আছি এই প্রবাসে। একবার আসুন আপনারা। আপনাদেরকে তো প্রতিদিনই টেলিভিসনে দেখি কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন,  একদিন না হয় একটা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না তারপরও আমাদের মনে একটা আশারবাণী ফোটে উঠবে। পদক্ষেপ নিন এটাই আমি সহ ২৩ লক্ষ নাগরিকের আকুল আবেদন। 

রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভালবাসা এবং টিপস

সবার ভালবাসার প্রতি রইল আমার হাজার সালাম। কারো ভালোবাসাকে ইঙ্গিত করে আমার এই লেখা না এটা শুধু মাত্রই আমার ব্যাক্তিগত চিন্তাধারা। ।

এখন ইন্টারনেট খুললেই অনেকের অনেক লিখনী আমাদের নজরে আসে। অনেকেই ভালবাসা টিকিয়ে রাখার জন্য,  ভালবাসার মানুষটিকে কাছে পাবার জন্য ,নারীর মন কিভাবে জয় করতে হবে ,অথবা একটা নারীর কাছে কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে এসব নিয়ে অনেক হাজার টিপস দিয়ে থাকেন। এই পর্যন্ত কত জন  বুকে হাত দিয়ে  বলতে পারবেন যে এসব টিপস পরে তাদের ভালবাসার সম্পর্কটি হয়েছে ? জগতের প্রযুক্তি দিয়ে আজ অনেক কিছুই সম্ভব যেমন গর্ভবতী নারীর পেটের সন্তানটি ছেলে না মেয়ে , শরীরের কোথায় পাথর হয়েছে সবই সম্ভব কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউকি মনের ভিতর কি আছে সেটা দেখতে পেরেছে কখনো ? কার মনে কি খেলা করছে অথবা কারো মনের কষ্ট কি কোনদিন ঔষধ দিয়ে সরানো গেছে ? আমার জানা মতে হয়ত মনের কষ্ট দেখানোর মত অথবা সেই কষ্ট দূর করার মত সাধ্য আজ প্রযুক্তি অর্জন করতে পারেনি।

আমি কয়েকজন পুরুষ মানুষের লিখা পরেছি যে কিভাবে আপনি আপনার ভালবাসার মানুষটির মন জয় করতে পারবেন। পড়ে অবাক হলাম সে কিভাবে এই টিপসগুলো লিখল ? ভাবছিলাম কোনো নারী কি তাকে বলেছিল তোমরা এই সেই করলে আমার মন জয় করা যায় ? যদিও সে কোনো নারী থেকে এই পরামর্শ নিয়ে লিখে থাকে তাহলে আমার কথা হলো সে ওই টিপসগুলো লেখার আগে তাকে বাংলাদেশের প্রায় ৭ কোটি নারী থেকে পরামর্শ নিয়ে লিখতে হবে। তারপর আমি আশা করি কারো সাথে কারো চাহিদা মিলবে না। কিভাবে আমরা ৭টি অথবা ১০টি টিপস দিয়ে তাদের মন জয় করতে পারি যেখানে ৭ কোটি নারীর ৭ কোটি ধরনের চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে ? আর যদি সে লিখার আগে কোনো নারীর পরামর্শ ছাড়াই তাদের মন চাওয়া কি হতে পারে সেটা বোঝতে পারে তাহেল আমি বলব নিতান্তই ব্যার্থ হয়েছে তার লিখা কারণ যেখানে কথায় বলে সয়ং বিধাতাও নারীর মন বোঝতে পারে না। তো টিপস পরে কারো মন জয় করতে যাবেন না। যদি টিপস পরে কাকতালীয় ভাবে দুই একটা সম্পর্ক হয়েও যায় তখন ভালবাসার খুটিটি স্থাপিত হয় সেই টিপস দিয়েই। যখন আপনার ভালবাসার মানুষ আপনাকে বলবে যে ""জানিনা কিভাবে তোমাকে মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেছি, বুঝতে পারিনি কখন তুমি তোমার ভালবাসা দিয়ে আমার মন জয় করে নিয়েছ"" তখন আপনি কি জবাব দিবেন তাকে? এটাই কি জবাব যে আরে আমিতো ভালবাসা দিয়ে না টিপস পরে তোমার মন জয় করেছিলাম? যদি আপনি সেটা না বলেন তখন আপনাকে নিতে হবে মিথ্যার আশ্রয়। তো জানি না টিপস পরে কতদিন ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখা যায়।

ছেলে অথবা মেয়ে সবার মন ভিন্ন ভিন্ন আর ভালবাসা দুটি ভিন্ন হৃদয়ের মাঝেই সৃষ্টি হয়। চোখের দেখায় একটা ভালোলাগা শুরু হলে আস্তে আস্তে বিধাতার মহিমার মাঝেই দুটি হৃদয়ে জন্ম হয় ভালবাসার। আমার কাছে ভালবাসা মানে দুটি শরীর তবে হৃদয় হয় একটি। ভালবাসার সৃষ্টি হওয়ার পর একজন তার ভালবাসার মানুষটিকে ঠিক সেই রূপে দেখতে চায় যেই রূপে তাকে সম্পর্ক হওয়ার আগে থেকেই কল্পনা করে আসতেছে। কারো জীবনে ভালবাসার মানুষ না থাকলেও সে যে স্বপ্ন দেখে না সেটা ভুল। সবাই সপ্ন দেখে।  যখন কেউ তার ভালবাসার মানুষ পায় তখন সে চায় এতদিন ধরে সপ্ন দেখে আসা মানুষটির মতই যেন সে হয়। যদিও পুরোপুরি হয় না তবে একজন আরেকজনকে তার মনের মত করে গড়ে তুলতে চায়। ঠিক তখন যদি আপনি আপনার ভালবাসার মানুষটির দিকে নজর না দিয়ে আমি শুধু বইয়ের ভিতর টিপস খোজতে থাকেন তাহলে আপনি টিপস পাবেন ঠিকই কিন্তু সেই টিপসগুলো ব্যাবহার করার মানুষ পাবেন না। আপনি টিপস খুজতে খুজতে হয়ত তার মনের আসল চাহিদা তা বুঝার ক্ষমতা আপনি হারিয়ে ফেলবেন।

এইত গেল ভালবাসা পাওয়ার বেপারে টিপসের ভুমিকা। এখন কিন্তু অনেক হাজার টিপস পাওয়া যায় যে ভালবাসার সম্পর্কটি নষ্ট হয়ে গেলে কি করবেন অথবা ব্রেক আপ হওয়ার পরে কিভাবে নিজেকে গুছিয়ে আনবেন তারও হাজার টিপসের ছড়াছড়ী এখন। কিন্তু আমি বোঝতে পারি না যেসব ছেলে মেয়েরা ভালবাসায় ব্যার্থ হয়ে আত্মহত্যা করছে তাদের চোখে কি সেই টিপসগুলো পরেনি ? হয়ত সেদিনের সেই টিপসগুলো পড়লে ওদের আবেগকে সে নিয়ন্ত্রণ করতে পারত এবং নুতুন করে ভালবাসার মানুষ খুঁজে নিতে পারতো। সেদিন তাদের হাতে এই টিপস পৌছালে হয়ত তাদের জীবনটা আর যেত না। হায়রে টিপস!!!!

একটি লোক গেল ডাক্তারে কাছে গিয়ে বলল ডাক্তার সাহেব আমার প্রেমিকা আমাকে ছেড়ে চলে গেছে কিন্ত আমি তাকে কোনভাবেই ভুলতে পারছি না। তো ডাক্তার তাকে বলল এটা কোনো ঔষধে যাবে না। চেষ্টা কর ভুলতে দেখবা আস্তে আস্তে  সব ভুলে যাবেমনকে শক্ত কর। তখন সে বলল, ডাক্তার সাহেব আমি অসুস্থ বলেই আপনার কাছে এসেছি আর আপনি বলছেন চেষ্টা করার জন্য? একজন মানুষ অসুস্থ হলে কি আর সারাজীবন সেই অসুখ থাকে নাকি? সাময়িক ভাবে যে কষ্ট সেটা দূর করার জন্য এবং এই অসুখটা যাতে চিরস্থায়ী রূপ নিতে না পারে সেজন্যই আপনার কাছে আসা। তখন রোগীর অনেক পীড়াপিড়িতে ডাক্তার তাকে ঘুমের ঔষধ দিয়ে বিদায় করে দিল। সেই মানুষটি তো মহা সুখী সে তার ভালবাসার মানুষটিকে ভুলার ঔষধ পেয়েছে তাই আর দেরী না করে সে ঔষধ খাওয়ার পর যখন দেখল ঘুম আসতেছে তখন সে ঘুমিয়ে পরল। কিন্তু সেই ঔষধে কি কোনো কাজ হয়েছিল ? না হয়নি বরং সেই ঘুমের মাঝে তার স্বপ্নে এসেছিল সে যাকে ভুলার জন্যই সে ঘুমিয়ে ছিল।

কোনো টিপসই কারো ভালবাসার মানুষটিকে ভলিয়ে দিতে পারে না কোনদিন না। ভালবাসা পাবার জন্য অথবা ভালবাসা হারিয়ে টিপস এর সহায়তা না নিয়ে নিজের প্রতি নির্ভরশীল হোন। সেই হতে পারে আপনার জীবন সঙ্গিনী যার স্বপ্ন দেখে আসছেন আপনি এতগুলো দিন ধরে। নিজেকে স্মার্ট করার টিপস আপনি নিতে পারলেও ভুলেও ভালবাসার মানুষটিকে জয় করার টিপস নিতে যাবেন না। টিপস নেওয়ার বদলে আপনার ভালবাসার মানুষটির দিকে আপনার নজরটি রাখুন। সত্যি যদি ভালোবেসে থাকেন তাহলে তার চোখের দিকে তাকালেই আপনি বোঝতে পারবেন তার চোখের ভাষা। তার চোখের দিকে তাকিয়েই পেয়ে যাবেন তাকে জয় করার সর্বশ্রেষ্ঠ টিপস। তার চোখের দিকে তাকিয়ে যখন আপনি তার মনের ভাষা বুঝতে পারবেন তখন আমার মনে হয় না আপনাকে আর কোনদিন ব্রেক আপ এর পরের টিপস খুজতে হবে কারণ আপনার চেয়ে তার জীবনে পরম আত্মীয় খুব কমই সে পাবে। 

আমরা যারা টিপস  ভালবাসার জন্য আমার মনে হয় টিপস লিখে আমরা যেই সময়টা নষ্ট করি সেই সময়টা যদি ভালবাসার পজিটিভ দিক গুলো তুলে ধরি তাহলে সবাই ভালবাসার সবার ভালবাসার মানুষটির দিকে নজর দিবে এবং সেই সাথে দেখা যাবে ব্রেক আপ এর ঘটনাও কমে আসছে। নিজের কাহিনী সবাইকে বুলন সেটা হোক সুখের অথবা দুঃখের। যদি সুখের হয় তাহলে সবাই আরো উত্সাহ পাবে আর যদি দুখের হয় তখন আপনার দুঃখ দেখে অন্যজন কেউ শিখবে যে কারো মনে দুঃখ  দেওয়া ঠিক না। 

ভালবাসা ও নারী

ছোট একটা গল্প বলি--------


একটি উচ্চবিত্ত ঘরের ছেলে ভালবাসত একটি মধ্যবিত্তের ঘরের মেয়েকে।ছেলেটি তাকে অনেক অনেক ভালবাসত।আজ শুক্রবার ছেলেটিকে নিয়ে মেয়েটির বেড়াতে যাওয়ার কথা। সকাল বেলা ছেলেটি মেয়েটিকে কল করলে সে মেয়েটি তাকে বলল সে  খুব অসুস্থ। যার কারণে সকাল থেকে সে কিছুই খায়নি। মেয়েটি আজ বিকালে সে বেরও হতে পারবেনা। মেয়েটি অসুস্থতার কারণে ভালোভাবে কথা বলতে না পারায় ছেলেটি ফোন রেখে দিল। সেদিন ছেলেটি তার পরিবারের সাথে দুপুরে খাবার খেতে বসলো , খাবার টেবিলে হরেক রকম খাবার সাজানো। হঠাৎ তার মনে হলো তার ভালবাসার মানুষটি সকালে তাকে বলেছিল সে অসুস্থ আর অসুস্থতার কারণে সে সকালের নাস্তাও করেনি। এমন সময় ছেলেটি তাকে আবার কল করে তার অসুস্থতার খবর নিল এরপর ছেলেটি আবার খাবার টেবিলে এসে খেতে বসলো। ছেলেটি  মুখে তখন মনে পড়ল তার ভালবাসার মানুষটি দুপুরের খাবার খায়নি। ছেলেটির পেতে আর খাবার গেলো না। নানা বাহানায় সে উঠেগেলো খাবার টেবিল থেকে।


বিকাল হল। ছেলেটি  খারাপ করে বসে রইলো। শুধু মেয়েটিকে অনুভব করতে থাকল। সকাল থেকে মেয়েটি একবার তার সাথে ভালোভাবে কথা বলে নাই। ছেলেটির খুব ইচ্ছা হলো তার একটু খবর নেওয়ার কিন্তু মেয়েটিকে যখন কল  করলো তখন মেয়েটি খুব ফিস ফিস করে বলল তার  মাথায় পানি দিবে তাই এখন সে কথা বলতে পারবে না। ছেলেটি ফোন রেখে দিলেও শান্তি পাচ্ছিল না কোনভাবেই। কোনো কিছুই তার ভালো লাগছিল না। ভাবলো মেয়েটির বাসার সামনে থেকে একটু ঘুরে আসবে কিনা ?মানুষ সান্তনা পাবার জন্য কত কিছুই না খুঁজে। যেই ভাবা সেই কাজ ছেলেটি রওয়ানা দিল মেয়েটির বাসার দিকে। যাওয়ার পথে হঠাৎ অপর দিক থেকে আসা একটি সিএনজি তে  একপলকে যেন খুব পরিচিত একটা মুখ নজরে আসলো। না সে ভুল করেনি এটা তারই মুখ যাকে সে অনেক ভালবাসে।

খুব ভীত  হয়ে ছেলেটি সেই সিএনজির পিছনে ছুটল। তার মনে খুব আতঙ্ক যে তার কি হলো ? কেন সে সিএনজিতে? হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নাতো  তাকে আবার ? হাজার ভাবনা খেলা করছে তার মাথা। একসময় সিএনজি থামল একটি পার্কের গেট সামনে এবং বেরিয়ে এলো মেয়েটি হা তার ভালবাসার মানুষটিই। সাথে আর একটি সুদর্শন ছেলে। দেখে যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল তার মাথায়। বুকে তার ব্যাথা হচ্ছিল প্রচন্ড। নীল রঙের কাপড়ে তাকে খুব সুন্দর লাগছিল যদিও মেয়েটির সূন্দুর্য আজ তার জন্য না।

এর চেয়ে বড় কোনো কষ্ট আর কি  পারে ছেলেটির জানাছিল না যখন ছেলেটি দেখল তারই ভালবাসার মানুষ হাত ধরে রয়েছে অন্য আর একজনের। সে সব লক্ষ্য করতে থাকলো। এরইমাঝে ছেলেটি কয়েকবার কল  দিল সেই মেয়েটির মোবাইলে মেয়েটি একবারও  রিসিভ করল না। ছেলেটি কিছুটা দূর থেকে সব দাড়িয়ে দেখছিল।
 বিকাল  সন্ধ্যা। সন্ধ্যার অন্ধকার যেন বয়ে আনলো ছেলেটির জীবনের পরম দৃশ্য যেটা ভালবাসার মানুষ হিসেবে সহ্য  করার ক্ষমতা কতজনের আছে জানি না। ছেলেটি আর থাকতে পারল না সেখানে যখন দেখল তারই ভালবাসার মানুষ সপে দিল নিজেকে সেই ছেলেটির কাছে আর এখন সন্ধ্যার অন্ধকার আলোতে ছেলেটির হাত খেলা করছে সেই মেয়েটির সম্পূর্ণ শরীরে।

রাত তখন ১২ টা। ছেলেটি ফুপিয়ে ফুপিয়ে সেই সন্ধ্যা ৮ টা থেকে কাদছে। ঠিক এমন সময় কল আসল মেয়েটার। রিসিভ করতে ইচ্ছা না করলেও কি বলে সেটা শুনার জন্য তার কলটা ধরল ছেলেটি।



ছেলে- হা বল।

মেয়ে - কি হলো তোমার ?
ছেলে - কোথায় কি হলো?
মেয়ে - সন্ধ্যা থেকে একবার আমার খবর নিলানা তুমি ?তুমি কি যেন না আমি অসুস্থ?তুমি বিকালে কল দিয়েছিলে কিন্তু তখন আম্মু আমার মাথায় পানি দিচ্ছিল তাই রিসিভ না করে কেটে দিয়ে ছিলাম কিন্তু এরপরে তুমি আর আমাকে একবার কাল দাওনি। ছেলেরা এমনি হয় স্বার্থপর। এই বলে মেয়েটাই রাগ করে ফোন কেটে দেয়। এরপর মেয়েটি আর কোনদিন তাকে কল দেয়নি ছেলেটার অপরাধ ছিল এটাই যে সে তাকে আর সন্ধ্যার পর কল দেয়নি আর এটাই ছিল মেয়েটির। বাহানা

এই ছিল আমার গল্প আসলে এটা একটা সত্যি কাহিনী।

উপরের গল্পটার মত হাজারো  গল্প আমি খুঁজে পাবেন তার মাঝে হয়ত এমন কিছু গল্প থাকবে যেগুলো পরে আমার এই গল্পটা তুচ্ছ মনে হবে।

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by প্রহেলিকা