বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৪

ডিজিটাল ভালবাসা

আমার ঘর থেকে বের হয়ে কাজী নজরুল স্কয়ারের (ডি সি হিল) দিকে যাচ্ছিলাম বিকাল বেলা। বাসা থেকে এর
দুরুত্ব এক থেকে দের কিলোমিটার হবে। তো এই পথটুকুর মাঝেই দুটি ঘটনা দেখলাম যার কারণে আমার এই লেখা আসলে। যাওয়ার পথেই একবন্ধুকেও নিয়ে যাওয়ার কথা তার তার বাসার সামনের গেটে দাড়িয়েছিলাম বন্ধুর অপেক্ষায়। আমার বন্ধুটি যখন গেট দিয়ে বের হচ্ছিল ঠিক তখনি গেটের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিল একটা মেয়ে। শরীরের সাথে ফিট করে পরা জামা আর তার উড়নাটা ছিল গলায় ঝুলানো। আমার বন্ধু আমার দিকে তাকিয়ে গেট থেকে বের হওয়ার সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে একটু ধাক্কা লেগে যায় সেই মেয়েটির সাথে। ধাক্কা লাগার পর যথারীতি নিয়মে মেয়েটি বলল চোখে দেখতে পান্না নাকি ?ঘরে কি মা বোন  নেই?মেয়ে দেখলেই ধাক্কা ইচ্ছা করে? বেয়াদব এইসব। তখন আমর বন্ধুটি শুধু  হা করে তাকিয়ে ছিল। কি হয়ে গেলো বেপারটা সে কিছুই বোঝে উঠতে পারল না। 

যাইহোক ঘটনাটা ঘটার পর আর কোথাও  যাওয়ার ইচ্ছা করলো না। তারপর কিছুক্ষণ অন্যদিকে সময় কাটিয়ে দুজনে আসলাম কাজী নজরুল স্কোয়ারে। ভিতরে গিয়ে উপরের দিকে উঠেই দেখতে পেলাম এক তরুণ আর একটা তরুনীকে বসে ছিল ঝোপের আড়ালে যদিও তাদেরকে খুব ভালই স্পষ্ট  করেই দেখা যাচ্ছিল। আর তাদের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া মানুষগুলো পার্কে সুবাতাস খাওয়ার বদলে যেন পর্ণ ছবির কিছু দৃশ্য টিকেট ছাড়াই দেখছিল। আমরা যখন হেটে যাচ্ছিলাম তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের নজরেও আসলো। এই সুন্দর বিকালে এমন দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল ওই তরুণ আর তরুনীকে গিয়ে কিছু টাকা দিয়ে আসি আর বলে আসি যে এই টাকাগুলো দিয়ে কোনো হোটেলে গিয়ে নোংরামিগুলো কর। কিন্তু পারলাম না। পরক্ষনেই অবাক হলাম পরের দৃশ্যটা দেখে। যখন মেয়েটা পিছনের দিকে অক্ত ফিরে তাকালো। চিনতে আর বাকি থাকলো না এটা সেই মেয়ে যে ঘন্টা খানেক আগে আমার বন্ধুটিকে অনেক বাজে কথা বলেছিল তার অনিচ্ছাকৃত ধাক্কা  খাওয়ার জন্য। রীতিমত আমরা দুজনে অবাক হলেও মেয়েটি মনে হয় আমাদেরকে চিনতেই পারে নাই। না চিনারই  কথা অবশ্য কারণ এখন বুঝতে পারলাম মুখ দিয়ে সে যাই বলুক না কেন মন থেকে সে খুশিই হয়েছে। আমার বন্ধুর সাথে অনিচ্ছাকৃত ধাক্কাটির  জন্য সে এত কথা বলতে পারল আর সেই মেয়েই এখন প্রকাশ্যে পর্ণ ছবির দৃশ্য শত শত দর্শকের মাঝে বিলিয়ে যাচ্ছে। এটাকে ওই মেয়ের ভালবাসার ধরন ধরে নিলাম আমি। 
ভালবাসা মানুষকে অন্ধ করে দেয় শুনতাম কিন্তু ওই দৃশ্য দেখে তা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলাম আর তাই তাদের ভালবাসা এমনি অন্ধত্ব লাভ করেছে যে শত মানুষের চলাচল তাদের কোনো গায়েই লাগলো না। সেলুট তাদের ভালোবাসাকে। 

আমি বেয়াদব, আমি বখাটে , আমি ইভটিজার। কত কথাই না শুনতে হয় তুমাদের মুখে যখন চলার পথে অনিচ্ছাকৃত ভাবে তোমাদের শরীরে লেগে যায় আমাদের শরীর। কি করবে ছেলেরা বল যেখানে  ১৬কোটি মানুষের বসবাস আমাদের দেশে সেখানে তো আর কারো সাথে ধাক্কা না খেয়ে রাস্তায় বের হওয়া সম্ভব না। ত্রাফ্ফিক জ্যাম যখন লাগে লক্ষ্য করবেন একটি রিক্সার পিছনেই এসে  ধাক্কা দেয় আর একটি রিক্সা তাই বলে তো আর তোমরা মেয়েরা রিক্সাওয়ালা কে দোষারোপ করতে পার না দোষ ট্রাফিক  জ্যামের। 

কাউকে উত্সাহ করার জন্য আমার এই লিখা না। লিখাটা শুধু লিখেছি তোমাদের সবাইকে একটা প্রশ্ন করার জন্য। 

আমার প্রশ্ন টা হচ্ছে ""আগে শুনতাম ভালবাসা নাকি থাকত চোখের চাহনির ভিতর মনের ভিতর। ভালবাসা নাকি দেখা যায় না শুধু অনুভব করা যায় তাহলে আজকাল  ভালবাসা এত ডিজিটাল কীভাবে? ২ বন্ধু যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যায় তখন এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে কিভাবে বলতে পারে দেখ দোস্ত ওই ছেলেটা আর মেয়েটা একজন আরেকজনকে ভালোবাসতেছে???

আশা করি উত্তরটা পাবো। 

সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৪

ঘুমের ঘোরে পথ চলা



আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে বুঝতেছিনা। সেই যে ট্রেন আসি আসি করে ৬ টা ঘন্টা পার করে দিলাম তারপরও ট্রেন আসছে না। কিন্তু আমাকে যে কাল সূর্য ওঠার আগে আদিত্য বৃক্ষটির কাছে পৌছাতে হবে। পৃথিবীতে সে ই একটি মাত্র বৃক্ষ, আর সে তার জীবনের একটিবারই ফল দেয়। সেই ফলটি ফলবে কাল সকাল ভোরে এবং সূর্য উঠার সাথে সাথে আবার বিলীন হয়ে যাবে, আর সেই ফল ভক্ষণের মাঝেই রয়েছে আমার বেচে থাকার আসা, আমার রোগমুক্তি।


কিন্তু ট্রেন এর তো কোনো দেখা পেলাম না এখন পর্যন্ত। তাহলে কি আমার আর যাওয়া হবে না ? তাহলে কি আমাকে আমার এই জীর্ণতা নিয়ে সারাজীবন কাটাতে হবে ? দেখতে দেখতে  আমার মত সকল মানুষ জড়ো হয়েছে সেই বৃক্ষের ফল ভক্ষণের আসায়। সবার শুধু একটায় লক্ষ্য আজ সেই বৃক্ষের কাছে পৌছানো।

দুপুর প্রেইয়ে বিকাল আর বিকাল পেরিয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। সবার দৃষ্টি যেন ট্রেনের ল্যাম্প পোষ্টের দিকে কখন তা জ্বলে উঠবে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে সেই কাঙ্খিত লালবাতি জ্বলে উঠলো। জ্বলে উঠার সাথে সাথেই সবাই হৈ  হৈ করে উঠলো। ট্রেনের সাইরেন শুনা যাচ্ছে। ট্রেন গোচরে আসার সাথে সাথেই বাধলো যত বিপত্তি , এতক্ষণ ধরে ট্রেনের অপেক্ষায় থাকা আমার মত শত শত যাত্রিগুলো হঠাৎ যেন উন্মাদ হয়ে গেল। তাদের আর কারদিকেই খেয়াল নেই শুদু তাদের মস্তিস্কে একটাই ভাবনা ট্রেন ধরার আর সেটা যেকোনো কিছুর বিনিময়েই হোক।

যেই না যাত্রীবোঝাই টট্রেনটা এসে  প্লাটফর্মে থামলো সাথে সাথে সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ল ট্রেনের প্রবেশদ্বারে। যে যেভাবে পারছে দখল করে নিচ্ছে তাদের জায়গা কিন্ত আমি ? তাদের এই ভীড়ে আমি যেন কোন ঠাই  পাচ্ছি না। সবাই শুধু আমাকে ঠেলে সামনে চলে যায়, যদিও প্রথম থেকে আমার অবস্থান ছিল সবার প্রথমে , আর সেই আমি আজ সবাই শেষে। বলার উপেক্ষা রাখেনা সব যাত্রীর মাঝে শুধু  আমিই ছিলাম পাতলা এবং সম্পূর্ণ রোগা। আর তার কারণেই আমারই শুদু ঠাই  হলো না ট্রেনে।

ট্রেন চলে যাচ্ছে আর আমি শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছি।বাকি সবাই ঠেলাঠেলি করে ট্রেন ধরতে পারলেও রয়েগেলাম আমি। এখন আর আমার পাসে কেউ নেই রাত তখন ১১টা। হাটছি তো হাটছি সেই রেললাইনের পথ ধরে ঘুটঘুটে এই শর্বরীতে যেখানে সুধাকরের প্রভাও অনুপস্থিত। হঠাৎ কারো ডাক শুনে পিছনে ফিরে তাকাই।  দেখলাম একটি মেয়ে আমাকে ডাকছে হাতের ইশারায়। আমি প্রথমে একটু অবাক হলাম এই বিদঘুটে রাতে একটি  দেখে। ভয়ে ভয়ে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঘেশ করলাম সে কে ? সে জবাব দিল '" যেই পথে তুমি হেটে যাচ্ছ সেটা আমারি পথ" অপরূপ সুন্দর সে তাই শুধু চেয়ে থাকলাম অপলক ভাবে। আমার নিরবতা ভেঙ্গে দিয়ে আমার কাছে সে জানতে চাইল আমি কেন এত রাতে এই পথ ধরে হাটছি। যেহেত তারই অধীনস্ত পথ ধরে হাটছিলাম তখন তাকে বললাম আমার সেই ট্রেনে স্থান না হওয়ার কথা। শুনে সে শুধু হাসলো আর বলল সবাই ধরল ট্রেন শুধু তুমি পারলে না ? তখন আমি বললাম আমিতো আর তাদের মত না। আমিতো  আর তাদের মত করে শক্তিশালী হয়ে জন্ম নেয়নি তাই আমি পারিনী।

সে একটু চুপ করে থেকে বলল আচ্ছা যাও তুমি যেই পথে যাচ্ছিলে দেখো চেস্টা করে কোনো উত্স খোজে পাওকিনা। তার চঞ্চলাময়ী হাসিতে তার প্রতি একধরনের দুর্বলতা জন্ম নিল আমার। আমাকে যাওয়ার কথা বললে আমি তাকে বললাম আমি বাচতে চাই এই সুন্দর পৃথিবীতে। আমাকে কোনো উপায় বলে দাও কিভাবে আমি সেখানে পৌছাতে পারি। কিন্ত সে চলে যেতে চাইল। আমি আমার আকুল মিনতি দিয়ে তার পথরোধ করলাম। একসময় সে বাধ্য হয়েই বলল চল তাহলে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। সে বলল সামনে একটা নদী আছে চল সেখানে গিয়ে দেখি কোনো নৌকা পাওয়া যায় কিনা। নদীপথে গেলেও তুমি তুমার লক্ষে পৌছাতে পারবে। তার কথামত দুজনেই হেটে চললাম সেই নদীর তীরের দিকে।

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে দুজনকে অবাক করে দিয়ে সেই নদী দিয়েই বয়ে যাচ্ছিল একটি ইঞ্জিন বাহিত নৌকা। খুব জোরে শব্দ আসছিল ইঞ্জিনের যেটা আমাদের কানেও পৌছালো। আমার পাসে দাড়িয়ে থাকা সেই অপরূপ মেয়েটি আমাকে বলল জোরে ডাক সেই মাঝিকে সেই হবে করতে পারবে তোমাকে পার। আমিও ডাকা শুরু করলাম মরিয়া হয়ে হয়ে যেন এই আমার শেষ আসা। ইঞ্জিনের জোরালো শব্দে আমার ডাক যেন মাঝির কানেই যাচ্ছে না , মরিয়া হয়ে দিকেই চলেছি কিন্তু মাঝির কোনো গাত্রদাহ হলো না।  একসময় মেয়েটি আমাকে বলল স্পষ্ট করে ডাক তুমি মাঝিকে। তোমার শব্দগুলোতো স্পষ্ট না। একে ইঞ্জিনের শব্দ এর উপর তুমি যদি অস্পষ্ট করে ডাক তাহলে তো মাঝি শুনবে না। আমিও আপ্রাণ চেস্টা করে দিকেই চলছি আর, মাঝিও বেয়ে চলছে তার তরী আপন গতিপথে। এভবে দেখতে দেখতে বিলীন হয়ে গেল শেষ আশার তরীটি।  অপুরুপা আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমাকে বলল তুমি যেভাবে ডাকলে মাঝিত দুরে থাক আমিই তো তোমার কথা স্পষ্টভাবে শুনতে পায়নি। অন্যকোনো পুরুষ মানুষ হলে এই নৌকাটি আর এভাবে চলে যেতে পারত না। তখন আমি তাকে বললাম দেখো আমি তাদের মত নই। আমি তাদের মত স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারি না। জন্ম থেকেই আমার টাই-টাং এর সমস্যা যার কারণে আমি স্পষ্ট ভাবে কথা বলতে পারি না।

দুজনেই সেই নদীর পথ ধরে হাটতে থাকলাম। হাটতে হাটতে একসময় বোঝতে পারলাম না আমার হয়ত সেই আদিত্য বৃক্ষের কাছে পৌছানো সম্ভব না। সেখানে পৌছানোর জন্য যা দরকার তার কোনো কিছুই আমার কাছে নেই। আমার কাছেতো কিছুই নেই, আমি কোন যোগ্যতায় সেখানে পৌছার আশা করি? নিজেকে আবিষ্কার করলাম একজন অযোগ্য পুরুষ হিসেবে। সাথের সেই অপরুপা সঙ্গীটিকে বললাম আমি আর সেখানে পৌছাতে চাই না। আমি আমার জীবনের স্বাদ পেয়েগেছি তোমার সাথে এই পথচলে। আমার জীবনে যদি কিছু সুখের মুহূর্ত থেকে থাকে সেটা হলো আজকে তোমার সাথে এই পথচলা। তোমার পাশে পথচলার এত সুখ সেটা হয়ত আমি বঝ্তাম না যদি জীবন বাচানোর রাস্তায় প্রথম ট্রেনটা আমি মিস না করতাম। তুমি ফিরে যেন তোমার আপন ঘরে হে অপরুপা , আমি আমার বাকি জীবনটা কোনো ভাবে কাটিয়ে দিব। অসুস্থ এই শরীরের রোগগুলো থেকে সারা পেতে তো আদিত্যে বৃক্ষের কাছে যাওয়াই হলো না। আর বেছে থাকার কোনো আশাই অবশিষ্ট রইলোনা আমার জীবনে।

অপরুপা অনেকক্ষণ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল 'আমরা দুজন পথ চলতে চলতে অনেক দূর হেটে চলে আসছি যা আমরা নিজেরাও জানি না। অনেকটা পথ পিছনে ফেলে আসছি এখান থেকে আর ফিরে যাওয়ার সম্ভব না।  আমাকে সে বলল আমি তোমার পাসে আছি এবং সারাজীবন থাকব যতদিন বেছে থাকি এই নশ্বর পৃথিবীতে। আমি যখন তুমার হাত ধরে এতুটুকু পথ হেটে আসছি আমি আমার জীবনের বাকি পথটুকু তোমার সাথেই হেটে যেতে চাই। সেই অপরুপা মেয়েটি আমাকে উত্সাহ দিতে থাকলো আর জানালো আমরা হাটতে হাটতে সেই আদিত্য বৃক্ষের অনেক কাছে চলে আসছি। মনে আবার বাচার আশা জেগে উঠলো আমার। চিত্কার করে অপরুপাকে বললাম আমি তোমাকে ভালবাসি অনেক ভালবাসি। হে অপরুপা তুমি যখন আমার পাসে থাকবে বলেছ তখন আমি হেরে যেতে পারিনা আমি পৌছাবই সেই বৃক্ষের কাছে। তুমি শুধু আমাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে যেও।

নুতুন করে বাচার স্বপ্ন নিয়ে তার সাথে হাতে হাত রেখে হেটে চললাম। জীবনের রংটাই যেন বদলে গেল তাকে পাশে পেয়ে হায়রে ভালবাসা অনেক মধুর একটা জিনিস। ভালবাসাই পারে চলার পথে সকল বাধা দূর করে নুতুন জীবনে বেছে থাকার স্বপ্ন দেখাতে। যেকোনো কঠিন কিছু কোমল  করা যায় শুধু ভালবাসা দিয়ে। এসব ভাবতে ভাবতে তার হাত ধরে চলতে চলতে দেখলাম সেই আদিত্য বৃক্ষটি আসতে আসতে স্পষ্ট হতে লাগলো চোখের দৃষ্টিতে। তার মানে আমি কি শেষ পর্যন্ত পৌছাতে পারলাম ? নিজেকে জয়ী মনে হলো অনেক কিন্ত এই জয়ের পিছনে যার এত অবদান সেই উপরুপাকে খুশিতে আমার এই বকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম। সেও আমাকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল আর বলল তোমার বুকে এত শান্তি আমি যে আর কোনদিন এমন প্রশান্তি পাইনি। হঠাৎ দেখলাম আমাকে জড়িয়ে ধরে রেখেই অপরুপা ঘুমিয়ে পরেছে।   সারাটা রাত আমার সাথে পথ চলতে চলতে ক্লান্ত অপরুপা আমাকে জড়িয়ে ধরে নিরাপদ আশ্রয় মনে করে আমার বুকেই ঘুমিয়ে পরেছে। তাই তার এই ঘুমটাকে ভাঙানোর শক্তি আমার ছিল না।

লাল সূর্য পূর্ব দিকে উদয় হল। এখনো সেই অপরুপা আমার বুকে ঘুম। আমি তাকিয়ে থাকলাম সেই আদিত্য বৃক্ষটির দিকে , সূর্য উঠার সাথে সাথেই সব ফল বিলীন হয়ে গেল। আমার কোন আফসোস হলনা ফলের জন্য শুধু এটাই মনে হল এই অপরুপাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ফল আমার জীবনের বড়  সম্পদ। তার ঘুম ভাঙ্গিয়ে ফল খাওয়ার সাহস আমার নেই। আমি ঘুম ভাঙ্গিয়ে ফল নেওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও সূর্যের আলো তা মানলো না। সে ঠিকই আমার অপরুপার ঘুম ভাঙিয়ে দিল। 

কে আপনি আর আমি বা এখানে কেন ? অপরুপার ঘুম ভাঙ্গার পর এটাই ছিল তার প্রথম প্রশ্ন। আমি বিন্দু মাত্র অবাক হয়নি। তাকে সব বললাম রাতের ঘটনা। সব সনে সে আমাকে বলল "আমি ঘুমের ঘোরে ছিলাম, এটা আমার একটা অসুখ যে আমি মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরেই  পথ চলি। আমি শুধু তাকিয়ে থাকলাম অপলক ভাবে তার দিকে। সে ক্ষমা চেয়ে আমার কাছে বলল " আমাকে মাফ করে দিবেন আজ আমার জন্য আপনি আসতে আসতে মৃত্যুর দিন গনবেন কিন্তু এখন আমাকে যেতে হবে আমার ঠিকানায়। আমার ঘরে কেউ আমার জন্য অপেক্ষা করছে। তা বলে আমাকে সে অনুরোধ করলো তাকে সেই জায়গায় পৌছে দেয়ার যেখান সে আমাকে পিছন থেকে ডেকেছিল। 

আমি এখন ছেলের মত জয়ী রাজার হাসি হাসতে হাসতে তাকে পৌছে দিতে যাচ্ছি। 

শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৪

কারো জীবন নিয়ে তামাশা নয়।

একটি ছোট ঘটনা আজ তোমাদের সাথে শেয়ার করব। বড় পোস্ট  কারোই  পড়তে ভালো লাগে না তাই চেষ্টা করব যাতে ছোট করেই তোমাদেরকে বলা যায়।

জীবনে কখন, কে, কার প্রেমে পরে যায় কেউ বলতে পারে না। প্রেম অথবা ভালবাসা যখন চোখের দৃষ্টির মাঝে থেকে শুরু হয় তখন কার দৃষ্টি কখন কার উপর পরবে কেউ তা জানে না। মেয়েটির নাম ধরে নিলাম বিন্ধ্যা। বিন্ধ্যাও একদিন একটি ছেলের প্রেমে পড়ে গেলো যেই ছেলে তারই সাথে একই ক্লাসে পড়ত। ছেলেটির নাম ধরে নিলাম হিমেল। বিন্ধ্যাও জানতো  হিমেল তাকে পছন্দ করে। হিমেলর চালচলন, চোখের চাহনি পছন্দ করার বার্তাটি বিন্ধ্যাকে পূর্বে জানিয়ে দিলেও ঐ  ছেলেটি আজও তার মুখ ফুটে বলে নাই। যদিও বিন্ধ্যা হিমেলকে পছন্দ করে তবুও বিন্ধ্যা চাইত  হিমেল এসেই তাকে ভালো লাগার কথা প্রথম প্রকাশ করুক। কিন্তু হিমেলও এসে তাকে বলে না। চলতে থাকে দুজনের মাঝে চোখে চোখে তাকিয়ে থেকে অপেক্ষা করা। এভাবেই দিন যেতে থাকে কিন্তু কেউ  আর কাউকে বলে না।

এইদিকে অরণ্য নামের একটি ছেলে বিন্ধ্যার দিকে প্রতিদিন তাকিয়ে থাকতে থাকতে একসময় প্রেমে পড়ে  যায় বিন্ধ্যার। অরণ্য ছিলো এলাকার বখাটে ছেলেদের মাঝে একজন। একদিন অরণ্য সাহস করে বলেই দিল বিন্ধ্যাকে যে, সে তাকে ভালবাসে। বিন্ধ্যা এতদিন হিমেলের জন্য অপেক্ষা করেছিল কখন আসে বলবে।  অপেক্ষা করতে করতে হিমেলের প্রতি তার একটা অভিমান জন্মায়। আর সেদিন অরণ্য বিন্ধ্যার কাছে তার ভালবাসা প্রকাশ করার পর হিমেলর প্রতি তার অভিমানের কারণে অরন্যের প্রথম প্রস্তাবেই সাড়া দেয় বিন্ধ্যা। অরণ্যকে সে পছন্দ না করলেও হিমেলের প্রতি অভিমানীই ছিলো অরণ্যের প্রস্তাবকে মেনে নেওয়ার একমাত্র কারণ।

সময়ের স্রোতে একটি বছর কেটেগেলো অরণ্য আর বিন্ধ্যার। এরই মাঝে বিন্ধ্যা অরণ্যকে জানালো একদিন হিমেলের প্রতি তার অভিমানের কথা এবং সেই অভিমান থেকেই অরণ্যকে সে ভালোবেসেছে।হিমেলের সাথে অভিমান করে অরণ্যকে ভালোবাসলেও বর্তমানে বিন্ধ্যা যে তাকে সত্যি ভালবাসে সেটাও বিন্ধ্যা জানালো। আর অরণ্য তাকে দ্বিতীয় বার বিন্ধ্যাকে বিশাস করে ভালবাসতে থাকলো।

কিছুদিন পর পারিবারিক সমস্স্যার কারণে বিন্ধ্যার বাবা তাকে ওই শহর থেকে অন্য শহরে নিয়ে চলে যায়। নুতুন শহরে যাওয়ার কিছুদিন পর অরণ্যকে সে জানালো যে , বিন্ধ্যা এখন কোনো ধরনের সম্পর্ক নিয়ে ভাবতে চায়  না , এখন সে শুধু তার লেখাপড়ার দিকে মনোযোগী হতে চায়। অরণ্য তার কথা শুনে আকাশ থেকে পরলেও যেহেতু জোর করে ভালবাসা হয়না সেহেতু বিন্ধ্যার সিদ্ধান্ত সে মেনে নেই. বন্ধ হয়ে যায় তাদের যোগাযোগ।

৬ মাস পর>>>>>>

একদিন বিন্ধ্যা অরণ্যকে ফোন করে জানালো সে অরণ্য কে ভুলতে পারবে না এবং সে অরণ্যকে অনুরোধ করে বললো যে আমাকে আগের মত করে ভালবাসার জন্য। অরণ্য তার ভালবাসার মানুষটিকে ফিরে পেয়ে মহা খুশিতে আবার শুরু হলো তাদের মাঝে যোগাযোগ।

পুরনো সব অতীত ভুলে চলতে থাকে তাদের ভালবাসা। ভালবাসায় অন্ধ আজ দুজনে। যদিও কারো সাথে কারো দেখা নেই শুধু  টেলিযোগাযোগ ছিলো  তাদের একমাত্র মাধ্যম। একদিন অরণ্য বিন্ধ্যাকে বললো  চল ওই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে আমরা দুজন দুজনকে স্বামী স্ত্রী হিসেবে কুবুল করে নেই. বিন্ধ্যাও সেদিন তাতে রাজী  হয়ে দুজন দুজনকে কুবুল করে নেয়।

এর কিছুদিনের মধ্যেই জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করা এবং নিজের পরিবারকে সুখে সাচ্ছন্দে রাখার উদ্দেশে অরণ্য চলেগেলো বিদেশে তবে বিন্ধ্যাকে সব জানিয়েই গেল সে। বিন্ধ্যার তাতে কোনো অমত ছিল না। পারি জমালো  বিদেশের মাটিতে। বাবা, মা, বোন, বিন্ধ্যা সবাইকে ছেড়ে বিদেশে গিয়ে খুব অসহায় হয়ে পড়ল অরণ্য। চোখের জল যেন তার নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। বিদেশ যাওয়ার ১৫ দিনপর অরণ্য একদম অসহায় হয়েই আর্তনাদ করতে থাকে একা একা কারণ তার যে আর এই বিদেশের কষ্ট সহ্য হচ্ছিল না। সেদিন ঠিক রাত ১২টায় বিন্ধ্যাকে সে কল দিল কিন্তু বিন্ধ্যা কার সাথে যেন কথা বলছিল। অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পরও বিন্ধ্যা তার ফোন ধরল না।  আর সেই অভিমানে তাদের মাঝে অনেকদিন যোগাযোগ বন্ধ ছিল। অনেকদিন পর বিন্ধ্যা নিজে আসে যখন ঐ দিন রাতে ফোন না ধরাটা তার ভুল হয়েছে স্বীকার  করলো তখন অরণ্য সব ভোলে গিয়ে তাকে আবার আপন করে নিল। 

প্রবাস জীবন চলছে আর সাথে চলছে শত নাটকীয়তা। অরণ্য তার জীবনের সাথে যেন যোদ্দ্ধ শুরু করলো। ঐদিকে অরন্যর পরিবারের অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে পড়ল। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ল অরণ্য প্রায় অনেক টাকা। এভাবেই ঝড়  নেমে আসলো অরন্যের জীবনে। কোনো আসা আর স্বপ্ন নাই  তার এখন। এত যোদ্ধের  মাঝে থেকেও বিন্ধ্যাকে তার ভালবাসা থেকে বঞ্চিত করেনি। চলছে অরন্যের ভালবাসা আর ঐদিকে চলছে ভালবাসা। 

প্রবাস জীবনের ২ বছর কেটেগেলো অরন্যের। তার অবস্থা যেন দিন দিন অবনতি হতে থাকলো। বাবা মা অসুস্থ সাথে অনেক টাকার ঋণ তাদের কিছুই যেন আর সহ্য করার মত না। এরই মাঝে বিন্ধ্যার সাথেও অরন্যের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। ইদানিং ঝগড়া ঝাটি লেগেই আছে আর এই ঝগড়াঝাটি যেন অরন্যের জীবনে মরার উপর খাড়া হয়ে দাড়ালো। 

এর কিছুদিন পর অরণ্য বুঝতে পারল বিন্ধ্যা তাকে এড়িয়ে চলছে। যদিও বিন্ধ্যার অনেক অবহেলা সহ্য করেও অরণ্য তাকে ভালোবেসে যাচ্ছিল।

একটি রাতের ঘটনা।

একদিন বিন্ধ্যা অরণ্যকে জানালো যে সে ফেইসবুকে আইডি খোলেছে। অরণ্যের কেমন জানি মনে হলো কারণ বিন্ধ্যার কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক জ্ঞান থাকলেও ফেইসবুক আইডি যে সে খুলতে পারবেনা সেটা সম্পর্কে সে ঠিকই জানত। অরণ্য বিন্ধ্যাকে জিগ্গ্শে করলো কে তার আইডি খোলে দিল তখন বিন্ধ্যা তাকে বলল তার একজন সহপাঠী যার নাম হিমেল। আর হিমেলই  তাকে সেই আইডি খোলে দেয়। 

যাইহোক আর বেশীকিছু লিখতে ইচ্ছা করছে না শুধু এটুকু জানাই তোমাদের আমরা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে সাক্ষী রেখে একজন আরেকজনকে কুবুল করে বিদেশে আসার পর হিমেল মানে বিন্ধ্যার পুরনো ভালোলাগার মানুষ এসে  যখন জানালো যে সে তাকে খুব ভালবাসে তখন বিন্ধ্যা তার ভালবাসায় পরে যায় তার পুরনো অভিমান ভুলে। সার্থক হয়ে যায় হিমেল আর বিন্ধ্যার ভালবাসা। কেটে যায় বিন্ধ্যার অভিমান হিমেলের প্রতি।


সেই অভিমানের বলী হয় অরণ্য। হায়রে অরণ্য!!!!!!এভাবেই অরণ্য বিন্ধ্যার সাথে কাটিয়ে দেয় ৫টি বছর। আর এই ৫ বছরে বিন্ধ্যাকে অরণ্য বিশাস করেছিল যতবারই বিন্ধ্যা তাকে বলেছিলো  সে অরণ্যকে ভালবাসে। 

এভাবেই অরন্যের মত বিশাস করে নষ্ট হয়ে যায় অনেকের জীবন। 

পোস্ট টি বড় হয়ে যাচ্ছিল খুব তাই পরতা শেষ  করতে পারলাম না। আমি জানি শেষটা কেমন জানি খুব সংক্ষিপ্ত হয়ে গেল। আসলে ৫ বছরের সম্পর্কই যখন খুব সংক্ষিপ্ত ভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তাহলে আমার এই গল্প পারবে না কেন?

সমাপ্ত 

শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০১৪

আমার পথ


আমি শত পথের মাঝে থেকে একটি পথ বেছে নিয়েছিলাম আমার পছন্দমত। অন্য কোনো পথ যেন আমায় আকৃষ্ট করত না।  তাই হেটেছি শুধু একই পথধরে, প্রতিদিন, অবিরাম। মাঝে মাঝে হোচট খ্য়েছি তবুও পথটাকে যে ভালোবেসে ফেলেছিলাম আর তাই এই পথের মায়া ছাড়তে না পেরে হেটে চললাম অবিরাম। স্বপ্ন ছিল এই পথ ধরে হেটে গেলে দেখা পাবো একটি জনপদের, আর জনপদের দেখা পাওয়াই ছিল আমার এই পথে হেটে চলার প্রধান উদ্দেশ্য কারণ শত বছর হলো কোনো জনপদের দেখা পেলাম না। এই পথ ধরে হেটে গেলে যে জনপদের দেখা পাব তার একটা প্রবল বিশ্বাস মনে ছিল আমার তে শুধু হেটেই চললাম কিন্তু পথের যেন আর শেষ হয় না। 

চলতে চলতে চলার পথে একদিন দেখলাম এক মহিলা প্রসব বেদনায় আর্তনাদ করছিল, যেহেত আসেপাসে কোনো জনপদ নেই তাই তার আর্তনাদে যেন আকাশ বাতাস সব কেপে উঠেছিল। কিন্ত আমি  পাষান ছিলাম আর এতই স্বার্থপর ছিলাম যে পথ দিয়ে হেটে জনপদ পাওয়ার লোভে সেই গর্ভবতী মহিলাটার দিকে আমি ফিরেও তাকালাম না. হেটে চললাম সামনের দিকে আমার সেই পুরনো পথে। 

আবার কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যখন একটি বৃক্ষের নিচে দাড়ালাম তখন আমার কানে একটি মা পাখির কাঁন্নার শব্দ এলো।  উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা পাখিটি তার তৃষ্ণায় ,অনাহারে মূমূর্ষ হয়ে যাওয়া বাচ্চাটির জন্য আর্তনাদ করছিল আর আমি তখন তাড়াতাড়ি  করে সেখান থেকে প্রস্থান করলাম। সেখান থেকে পালিয়ে আবার আমার সেই পুরনো পথে হাত শুরু করলাম।

শেষ যেন হতে চায় না এই পথ আমার। আর কতদূর?

 চলতে চলতে হঠাৎ একদিন সকালের আলোতে দেখি সামনে আর কোনো পথ নাই. কিন্ত একি ??? আমি এতদিন যেই জনপদের লোভে হেটে এসেছি অবিরত সেই পথ বিলীন হয়ে রূপ নিল বিস্তর এক মুরুভূমিতে। যেই মুরুভুমির কোনো শেষ নাই। 

না আমি আর পিছনে ফিরে যেতে পারব না, পাষানের মত সব ভুলে এই পথকে যখন ভালোবেসে এতদূর হেটে এসেছি তখন আমি আর পিছনে ফিরে যেতে পারব না। এই পথ যখন আমাকে ভালোবেসে জনপদের বদলে এই মুরুভমিতে এনে দাড় করলো তখন এই মুরুভমিই হোক আমার শেষ ঠিকানা আর এখানেই হবে আমার শেষ নিশ্বাস। 

আমিন পরবাসী

আমার নাম কিন্ত শুধু  আমিন, যখন নিজের দেশ  ছেড়ে এই মুরুভুমির দেশে পা রাখলাম তখন পরবাসী শব্দটা নিজের নামের সাথে কেন জানি যোগ করে দিলাম সম্পর্ণ আমার ইচ্ছায় আর এতদিন পর অনুধাবন করলাম যথার্থই আমি শব্দটার ব্যবহার করতে পেরেছি। তাই নিজেকে এখন আমিন পরবাসী হিসেবেই উপস্থাপন করতে সাচ্ছন্দ বোধ করি এবং এই পরবাসী শব্দটাই যেন আমার পরিচয় বহন করে.

কৃতজ্ঞ আমি মহান আল্লাহর দরবারে আমাকে আকাশযানে ভ্রমন করানোর জন্য। উফ!!! কি যে এক অনুভূতি যেটা না দেখলে বোঝানো যাবে না। বিমানে জানালার পাসের সিটে  বসে যখন নিজের দিকে তাকালাম তখন মনে হলো পৃথিবীটা যেন সাদা চাদরে ঢাকা পরে গেছে। মেঘের উপরে চড়া এইবারই আমার প্রথম। মনে মনে অনেক খুশি কারণ যাত্রাটা সম্পূর্ণ নতুন কিছু দিয়ে শুরু হলো। আর সেই আকাশ যান আমকে শেষে ফেলেদিলো এই মরুভমির দেশে। 

এই দেশে সবকিছু আছে কিন্ত তারপর যেন আমার দেশের মত কিছুই নাই. এখানে যাই আছে সব কৃত্তিম। অকৃত্তিম বলতে শুধু একটাই আছে সেটা হচ্ছে কষ্ট। কষ্ট যেটা আছে সেটা যেন সম্পূর্ণ ভেজালমুক্ত। প্রথম দিন মেঘের উপরে ভেসে বেড়ানোর খুশিতে সেটা অনুধাবন করতে না পারলেও আজ আমি কিন্ত ঠিকই করছি। 

সুখ সুখ সুখ কত যে সুখ লুকিয়ে রয়েছে এই প্রবাস জীবনে তা প্রবাসে না আসলে কেউ  বুজবেন না আসলে। আমি হয়ত এত সুখের কথা এখানে বর্ণনা করতে পারবনা তবে এটুকু  বলব শুধু যে প্রবাস জীবনের সুখ দেখেই হয়ত নিজের নামের সাথে পরবাসী শব্দটা যুক্ত করলাম।

কি? খুব হিংসা হচ্ছে আমাদের সুখের কথা শুনে তাই না? তবে আমরাও কিনতু স্বার্থপর কম না আমরা কেউ  চাই না যে আমরা পরবাসে এসে  যেই সুখটা পাচ্ছি সেটা যেন র আপনারা না পান যারা আজও পরবাসে পা দেননি। আমাদের সুখ আমাদেরকেই ভোগ করতে দিন। 

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৪

সংবাদ

আজ সন্ধ্যায় টেলেভিসনের প্রায় প্রত্যেকটা চ্যনেলের সংবাদ দেখলাম আর ক্ষোভ জন্মাতে থাকলো মনের ভিতর। সংবাদ দেখার সময় ভাবছিলাম হয়ত সেই গরিব লোকটির কথা সংবাদে প্রাধান্য পাবে যে লোকটির কাছ থেকে ছিনতাই হয়েগেছে  ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা তাও আবার বেলা ২ টার দিকে জনসম্মক্ষে। এমন ঘটনা তো প্রতিনিয়তই ঘটছে তারপরও সংবাদের মাঝে ওঠে আসার কথা এজন্ন্য বললাম কারণ ঘটনার পর সেখানে সংবাদিক নামের দুই একজন মানুষ উপস্থিত হয়েছিলেন। তো খবর তো দেখছি..................তো দেখছি............... কিন্ত না সেই গরিব লোকটির টাকা ছিনতাই হওয়া নিয়ে কোনো সংবাদ নজরে পড়লনা আর পরার কথাও না যেখানে কোনো একজন কোটিপতি লোকের কারো জন্মদিনে গিয়ে কেক কাটার মত গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ আছে. তখন ভাবতে লাগলাম যে, ওই শিল্পপতি লোকটির জন্যই হয়ত সংবাদ নামের শব্দটি যা কিন্ত সেই গরিব লোকটি পেতে পারে না যে তার সম্পূর্ণ সম্বল বিক্রি করে টাকাগুলো জমিয়েছিলেন তার মেয়েকে বিয়ে দিবেন বলে. আসলে আমারি ভুল হয়েছে এমনটা প্রত্যাশা করা.

ডিসেম্বর মাস ২০০৩, তখন আমি SSC পরিক্ষার্থী, আমার একজন সহপাঠীর সাথে কথা কাটাকাটি থেকে মারামারি হয় সাথে মুখে গালাগালি, দুটি ছাত্রের মারামারি আর কেমন হতে পারে আপনারাই ভেবে নিবেন। তো সেদিনের মারামারির পর আমি ভাবতেও পারিনি আমার মত একটা গাদা ছাত্র, গরীব  ঘরের সন্তানের নাম সংবাদ পত্রের পৃষ্ঠায় স্থান পাবে। মারামারি হওয়ার ২ দিন পর যখন দেখলাম আমার নাম সংবাদপত্রের পাতায় স্থান পেয়েছে, তখন খুশিতে আত্মহারা না হয়ে আমার আর কোনো উপায় ছিল না. হোক না সেটা আমাকে ছিনতাইকারী উল্লেখ করে সেই মারামারি করা  সহপাঠীটার কাছথেকে টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ যেটা তার বড়লোক বাবা দিয়েছিল সংবাদপত্রে।

পরিশেষে শুধু এটা বলতে চাই যে, তোমরা সবাই যতই যুক্তি আমাকে দেখাও না কেন আমার কাছে শুধু এটাই মনে হয় যে আমাদের দেশে তাদের খবর ই প্রাধান্য পাবে যাদের রয়েছে টাকা নামের বস্তুতি। আমাদের মত যারা গরীব  ও মধ্যবর্তী ঘরের সন্তান তাদের কোনো বিষয় কোনদিন কারো নজরে ওঠে আসবে না.

Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by প্রহেলিকা