মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

শুভ হোক জন্মদিন

জানি চাইবে না, উষ্ণ চুম্বনে অমিয় নিস্তব্ধতায় ডুবে যাক শরতের পুরোটা বেলা, ভারসাম্যহীন কম্পন ঘোরে ছুয়ে দেক বিচলিত আঙ্গুলেরা, বর্ধিত হোক শ্বাসের ধ্বনি। আকাশের সমস্ত নীল বাঁধা আঁচলে দুদোল হাতে শিহরিত স্বেদকণা মুছে, বলবে না চল যাই; নৈসর্গিক এক সন্ধ্যা নামাই প্রেমকে বেঁধে দেই একই কামনার সুঁতোয়। জানি থাকবে না, চাতক চোখে তাকিয়ে কোন শুভেচ্ছা বার্তার, উস্কে দিয়ে অপেক্ষাকে কাটাবে না আজ ধীর বিকেল, ভেজাবে না চোখের কাজল একটু দেরী হলে। তবুও জ্বালাবো আজ আঁধার পোহানো সন্ধ্যা প্রদীপ, থাকুক যত বন্ধকী ঋণ সাজাবো আজ অবিন্যস্ত দিন, জানাতে তোমায় মৃদু স্বরে শুভ হোক জন্মদিন।...

রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তুমিই গন্তব্য (কবি শামসুর রাহমান)

সকালে গলির মোড়ে, দ্বিপ্রহরে রেস্তোঁরায়, অপরাহ্নে পার্কে,সন্ধেবেলা বাস-স্টপে, মধ্যরাতে ইস্টিশানে কিংবাগিজগিজে বাণিজ্যিক এলাকায়, দরজির দোকানে, ঘ্রাণময়সেলুনে বকুলবনে, যেখানেই যখন ডাকোনা কেন তুমি,তোমার কাছেই যেতে হয়।কী শীত কী গ্রীষ্মসকল ঋতুতেতোমার কাছেই যেতে হয়। নিমেষেই কী বিপ্লববিস্ফোরিত অস্তিত্বের নিঝুম পাড়ায়। অকস্মাৎঅন্তরাল থেকে নীল পতাকা উড়িয়ে দাও আররক্তচক্ষু ট্রাফিক বাতির মতো পিতার নিষেধ,মাতার কাতর অনুনয়,হৈ হুল্লোড়ময় রাস্তার কিনারে ফেলে রেখেতড়িঘড়ি পা বাড়াই তোমারই উদ্দেশে। বার-বারঝঞ্ছাহত চৈতন্যের দায়ভাগ নিয়েতোমার কাছেই যেতে হয়।কোনো কোনো রাতে কাক না জাগার আগেই কী ছলেআমাকে জাগিয়ে দাও। শোচনীয় পিপাসায় গলাকাঠ হ’য়ে যায়, তুমি জলের বদলে স্পঞ্জ থেকেবিন্দু বিন্দু সির্‌কা নিংড়ে দাও। কখন যে হেলাভরেআমাকে দেয়াল ঠুকে খুন করো কর্কশ পেরেকে,চৈত্য থেকে টেনে এনে আবার বাঁচাও-বোঝা দায়।নিজের রক্তের নক্‌শা দেয়ালে...

কবি শামসুর রাহমান এর দুটি কবিতা-২

নিরুপমার কাছে প্রস্তাব বকুলতলায় যাবে? তুমি বড়ো সন্দেহপ্রবণ,সেখানে, বিশ্বাস করো, সাপখোপ নেই, মাস্তানেরআড্ডা নেই। বিপদের আবর্তে তোমাকে কোনোদিনডোবাতে পারি না। পাখি আসে সেখানে এবংকয়েকটি প্রজাপতি হয়তো-বা। কবিতার বইইচ্ছে করলে আনতে পারো, পাশাপাশি পড়বো দু’জন।সেকেলে টেকেলে যা-ই ভাবো, প্রাণ খুলে যত দুয়োদাও আধুনিকা, তবু তোমাকেই বকুলতলায়নিয়ে যাবো; করো না বারণ। যদি পাখি না-ও ডাকে,না-ও থাকে এক শিখা ঘাস সেই বকুলতলায়,তবু নিয়ে যাবো। না, ওভাবে ফিরিয়ে নিও না মুখ,ভেবো না আমার নেই কালজ্ঞান। বস্তুত আমিওঅনেক উত্তাল দীপ্র মিছিলে শামিল হ’য়ে যাই,যখন ভিয়েতনামে পড়ে বোমা, আমায় হৃদয়হয় দগ্ধ গ্রাম মেঘে মেঘে খুনখারাবির চিহ্নখুঁজে পাই; উপরন্তু বসন্তের পিঠে ছুরি মেরেহত্যাকারী সেজে বসে আছি। কেন এ প্রহরেতোমাকে হঠাৎ দূরে বকুলতলায় যেতে বলি?বহুকাল হলো আমি অতিশয় নষ্ট হয়ে গেছি।আমার ভেতর এক দুঃস্বপ্ন-দুনিয়া পরিব্যাপ্ত,ভয়াল নখরময়...

কবি শামসুর রাহমান এর দুটি কবিতা-১

প্রচ্ছন্ন একজন ভরাট দুপুর আর নিশুতি রাত্তির নিয়ে বুকেপ্রত্যহ সে করে চলাফেরাআশেপাশে, কথোপকথনে মাতে পথ ঘাটে যদিইচ্ছে হয় শুধায় কুশল পাত্রমিত্রদের। কখনো সখনোতাকে যায় দেখা রেললাইনে, কখনো ডোবার ধারেকাটায় ঘন্টার পর ঘন্টা, কী যেন অধীর দেখে নিস্তরঙ্গজরৎ সবুজ জলে, আঙুলে বসন্ত নিয়ে কখনো চালায়ব’সে মাপে অন্ধকার, জ্যোৎস্না, কখনো-বাল্যাস্পপোস্টে ব’সে থাকে দু’হাত বাড়িয়েআকাশের দিকে, যেন নেবে করতলেচমৎকার আসমানী পণ্য-চাঁদের ভগ্নাংশ, নক্ষত্রের ফুলকি অথবা নীলিমাযা’ পড়ে পড়ুক।ঘরে এসে ঢুকলেই দ্যাখে চার দেয়ালের একটাওনেই কাছেধারে, ছাদ মেঘ হয়ে ভাসে, ‘ঘর তবুতো ঘর”ব’লে সে গভীর নিদ্রা যায় নগ্ন উদার মেঝেতে।স্বপ্নের চাতালে।লাল বল অতিশয় চপল এবংসবুজ পুষ্পতি ট্রেন বাজায় বিদায়ী বাঁশি, ট্রাফিক পুলিশচিনির পুতুল হয়ে দিকদর্শী অত্যন্ত নিপুণ।সে ঘুমের ঘোরে হেসে ওঠে, যখন ভারিক্কী এককাকাতুয়া আপিসের বড় কর্মকর্তার ধরনে।কার্যকারণেরহদিশ...

তবে মননেও (কবি শামসুর রাহমান)

আড়ালেই থাকি, ত্রস্ত সর্বদাই; ব্যস্ত ভিড় ঠেলেকবুই ভরসা ক’রে সম্মুখে এগিয়ে যাওয়া আজোহলো না আমার। পাদপ্রদীপের আলো কোনোদিনপড়বে না মুখে জানি। তা ব’লে ভাগ্যের কথা তুলেবারোমাস কাউকে দিই না দোষ। হাটে মাঠে নয়,মৃদু আলো-আঁধারিতে গৃহকোণে একা একা কাটেপ্রায়শ আমার বেলা। খেয়ালের বশে বাস্তবেরসঙ্গে খেলি কানামাছি-লেখার টেবিলে অকস্মাৎদেখে ফেলি ডোরাকাটা উদ্দাম জেব্রার দল কিংবাগন্ডারের একরোখা দৌড়, কখনো লেগুন নম্রওঠে জেগে আদিম জলের মায়া নিয়ে। স্নানার্থিনীকটি থেকে দেয় ছেড়ে প্রাচীন বাকল, প্রেমবিদ্ধবংশীবাদকের সুরে পাথর, মরাল আসে ছুটে,সিংহ আর মেষ থাকে শুয়ে পাশাপাশি, কখনো বাজিরাফ বাড়ায় গলা বইয়ের পাহাড় ফুঁড়ে, দেখিবারংবার টেবিলের ইন্দ্রজালঃ ট্রয়ের প্রাচীরশালের ঘর্মাক্ত আলোয় বড়ো বেশি নিঃস্ব, যেনপ্রেতপুরী; এক কোণে বাংলার মাটিলে ঘরপ্রস্ফুটিত, অন্যদিকে পদ্যাক্রান্ত নিশি-পাওয়া কাফে।বইয়ের পাতায় খুঁজি মুক্তির সড়ক বদ্ধ ঘরেপ্রত্যহ,...

খুলোনা এ মুখ (কবি শামসুর রাহমান)

তোমাকে দেখলে ভয় পাই খুব, বুকের ভেতরঅশ্বক্ষুরের প্রখর শব্দ, জাগে কলরবপ্রাকারে প্রকারে। ক্রূদ্ধ মশাল, কাঁপে থরথরঘুমধরা হাড়, চোখে ভাসমান বেকসুর শব।তোমার অমন ভবিষ্যময় চোখে তাকালেইপারমাণবিক ভস্ম আমাকে করে দ্রুত গ্রাসহাতড়ে হাতড়ে কোনো সূত্রের পাই না যে খেই,পায়ের তলায় মাটি অস্থির, বর্বিত ত্রাস।দোহাই তোমার এক্ষুণি ফের খুলোনা এ মুখ।ফস ক’রে তুমি কী যে ব’লে দেবে, দেয়ালের দিকেতর্জনী তুলে স্তোত্র পাঠের উদাত্ত সুখচোখে নেবে কিছু হয়তো আনবে কাল-রাত্রিকে।তোমার ভীষণ ভাবী কথনের নেই কোনো দামমাঠে কি পার্কে, কলোনীতে, মেসে, গলির গুহায়।আত্মাকে ঢেকে খবর-কাগজে যারা অবিরামপ্রমত্ত তারা দেয়ালে কিছুই দেখে না তো, হায়।অন্যে বুঝুক না বুঝুক আমি জানি ঐ ঠোঁটনড়লেই কালবৈশাখী দেবে দিগন্তে হানা,প্রলয়ের সেনা গোপনে বাঁধবে নির্দয় জোটহত্যার সাথে, ঝাপটাবে খুব নিয়তির ডানা।তুমি বলেছিলে, জননী তোমার কুক্কুরী-রূপপাবে একদিন, জনক সর্বনাশের বলয়েঘুরপাক...

কোনো কোনো মুহূর্তে হঠাৎ (কবি শামসুর রাহমান)

সকল সময় নয়, কোনো কোনো মুহূর্তে হঠাৎতোমাকে হাওয়ার পাই, পাই সিগারেটের ধোঁয়ায়।কখনো দরজা খুলে দাঁড়ালেই স্মিত অন্ধকারে,কখনো বা সুরভিত বারান্দায় মৃদু চন্দ্রলোকে,গোলাপের অন্তঃপুরে, কখনো সড়কে, মৃত্যু আরজীবনের গুঞ্জরণময় হাসপাতালের বেডেসহসা তোমাকে দেখি। গাছগাছালির অন্তরালেমেঘের উড্ডীন দ্বীপে, এমন কি গোষ্পদেও তুমি।তুমি এলে আমার চৌদিকে অবলীলাক্রমে দৃশ্যকেবলি পাল্টাতে থাকে, তুমি এলে হাজার হাজারনক্ষত্রের তোড়া আমার সম্মুখে দীপ্র উপস্থিত,সুনীল সমুদ্র ওঠে দুলে, দিগন্তের পাড় চিরেউদ্ভাসিত জাহাজের গর্বিত মাস্তুল; নীল জলেকুহকের কেশপাশ, জাগে প্রতিধ্বনিময় দ্বীপ।তুমি এলে একরাশ ভেলভেটপ্রতিম গোলাপমোহন আলাপে মাতে বেহালার সাথে, মাথাভরাঅজস্র উকুন নিয়ে রুক্ষ্ম, একাকিনী ভিখারিনীখিস্তি খেউড়ের মধ্যে অকস্মাৎ পুঁটলি দুলিয়েগায় ঘুমপাড়ানিয়া গান এবং ভাগাড়ে কতোপোকাকীর্ণ পশুর নিথর চোখে ভাগবত লীলা!তুমি এলে কংকালের দশটি আঙুল ঘুণধরা,হিহি...

কী পরীক্ষা নেবে? (কবি শামসুর রাহমান)

কী পরীক্ষা নেবে তুমি আর বারবার?হাতে জপমালা নেই, তবুআমি তো তোমার নাম মন্ত্রের মতনকরি উচ্চারণ সর্বক্ষণ। যেখানে তোমার ছায়াস্বপ্নিল বিলাসেঅপূর্ব লুটিয়ে পড়ে, সেখানে আমার ওষ্ঠ রেখেঅনেক আলোকবর্ষ যাপন করতে পারি, তোমারই উদ্দেশেসাঁতার না জেনেও নিঃশঙ্ক দ্বিধাহীনগহন নদীতে নেমে যেতে পারি।তোমার সন্ধানে ক্রোশ ক্রোশ দাউ দাউ পথ হেঁটেঅগ্নিশুদ্ধ হতে পারি, পারিবুকের শোণিতে ফুল ফোটাতে পাষাণে।যখন পাথরে হাত রাখি,পাথর থাকে না আর অরূপ পাথর,হয়ে যায় প্রতিমা তোমার।যখন বৃক্ষের দিকে দৃষ্টি মেলে দিই,বৃক্ষ হয় তোমার শরীর।প্রত্যহ তোমার প্রতীক্ষায় এক বুক উপদ্রব নিয়ে থাকি,ব্যাকুলতা বারবার সিঁদ কেটে ঢোকে,হৃদয়ের ঘরগেরস্থালি, বনস্থলীলুট হয়ে যায়প্রত্যহ তোমার প্রতীক্ষায়, আমি তাই তুমি ছাড়া কারুর জন্যেইপারি না অপেক্ষা করতে আর।ঠোঁট দিয়ে ছুঁয়েছি তোমার ওষ্ঠজাম, তুমি না থাকলেআমার সকল চুমো যাবে বনবাসে,তোমার অমন হাত স্পর্শ ক’রে ছুঁয়েছি...

এ রকমই হয় (কবি শামসুর রাহমান)

বৃক্ষের নিকটে গিয়ে বলিঃদয়াবান বৃক্ষ তুমি একটি কবিতা দিতে পারো?বৃক্ষ বলে, আমার বাকল ফুঁড়ে আমার মজ্জায়যদি মিশে যেতে পারো, তবেহয়তোবা পেয়ে যাবে একটি কবিতা।জীর্ণ দেয়ালের কানে বলিঃদেয়াল আমাকে তুমি একটি কবিতা দিতে পারো?পুরোনো দেয়াল বলে শ্যাওলা-ঢাকা স্বরে,এই ইট সুরকির ভেতর যদি নিজেকে গুঁড়িয়ে দাও, তবেহয়তোবা পেয়ে যাবে একটি কবিতা।একজন বৃদ্ধের নিকটে গিয়ে বলি, নতজানু,হে প্রাচীন দয়া ক’রে দেবেন কি একটি কবিতা?স্তব্ধতার পর্দা ছিঁড়ে বেজে ওঠে প্রাজ্ঞ কণ্ঠ- যদিআমার মুখের রেখাবলীতুলে নিতে পারোনিজের মুখাবয়বে, তবেহয়তোবা পেয়ে যাবে একটি কবিতা।কেবল কয়েক ছত্র কবিতার জন্যেএই বৃক্ষ, জরাজীর্ণ দেয়াল এবংবৃদ্ধের সম্মুখে নতজানু আমি থাকবো কতোকাল?বলো, কতোকাল?কাব্যগ্রন্থ: আদিগন্ত নগ্ন পদধ্বনি (১৯৭...

অমন তাকাও যদি (কবি শামসুর রাহমান)

অমন তাকাও যদি একবিন্দু অনন্তের মতো চোখ মেলে,আমি বারবারতোমার দিকেই ছুটে আসবো প্রত্যহ।যেখানে তোমার দৃষ্টি নেই,তোমার পায়ের ছাপ পড়ে না যেখানে কেনোদিনসেখানে কী করে থাকি? তোমাকে দেখার জন্যে আমিযশের মুকুটছুঁড়ে দেবো ধূলায় হেলায়, তাকাবো না ফিরে ভুলেকস্মিনকালেও আর। মেনে নেবো হার, এই খরমধ্যাহ্নেই হয়ে যাবো স্বেচ্ছায় সূর্যাস্ত; জেনে রাখো,তোমাকে দেখার জন্যে বেহেস্তী আঙুর আর কয়েক ডজনহুরীর লালচ আমি সামলাতে পারবো নিশ্চিত।তোমার নিদ্রার ঢেউয়ে ঢেউয়ে যাবো বেয়ে ছিপ নৌকোএবং লাফিয়ে প’ড়ে তোমার স্বপ্নের তটে আবিষ্কারকেরমতো দেবো পুঁতেআমার নিঃশ্বাসে আন্দোলিত এক পবিত্র নিশান।কখনো নিদ্রার রাজপথে, কখনো-বা জাগরণেবাগানে কি পার্কেসড়কে ট্রাফিক দ্বীপে, বাসেগোলাপ শ্লোগান হাঁকে একরাশ, উড়ন্ত কপোতঅকস্মাৎ দিগ্বিদিক লুটোয় নিষিদ্ধইস্তাহার হ’য়ে,পড়ি, ‘নরকেও ভালোবাসা ম্যানিফেস্টো হিরন্ময়।অমন...

রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

তোমার দিকে আসছি (হুমায়ুন আজাদ)

অজস্র জন্ম ধরে আমি তোমার দিকে আসছি কিন্তু পৌঁছুতে পারছি না। তোমার দিকে আসতে আসতে আমার এক একটা দীর্ঘ জীবন ক্ষয় হয়ে যায় পাঁচ পঁয়সার মোম বাতির মত। আমার প্রথম জন্মটা কেটে গিয়েছিলো শুধু তোমার স্বপ্ন দেখে দেখে, এক জন্ম আমি শুধু তোমার স্বপ্ন দেখেছি। আমার দুঃখ, তোমার স্বপ্ন দেখার জন্যে আমি মাত্র একটি জন্ম পেয়েছিলাম। আরেক জন্মে আমি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পরেছিলাম তোমার উদ্দেশ্য। পথে বেরিয়েই আমি পলি মাটির উপর আকাঁ দেখি তোমার পায়ের দাগ তার প্রতিটি রেখা আমাকে পাগল করে তোলে। ঐ আলতার দাগ,আমার চোখ,আর বুক আর স্বপ্নকে এতো লাল করে তুলে, যে আমি তোমাকে সম্পূর্ন ভুলে যাই ঐ রঙ্গীন পায়ের দাগ প্রদক্ষীন করতে করতে আমার ঐ জন্মটা কেটে যায়। আমার দুঃখ ! মাত্র একটি জন্ম আমি পেয়েছিলাম সুন্দর কে প্রদক্ষীন করার। আরেক জন্মে তোমার কথা ভাবতেই- আমার বুকের ভিতর থেকে...

বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

প্রবীণ

জাগতিক সিলেবাসের বাইরে দাঁড়ানো কানাগলির হাতছানিতেহঠাৎ তার কটকিনাগুলো অসভ্য হয়ে উঠে,নাবালক চোখে টোকা দেয় খামখেয়ালী সূর্যাস্ত সজোরে,গয়নার নৌকা পৌঁছে দিয়ে গর ঠিকানায়।কেঁদে উঠে মন, জানে না কখনএক, দুই করে করে আসে ষাটের ক্ষণ,অত:পর শেষকন্না বুঝিয়ে দাও নতুবা পুরন্ত যৌবন।...

রাত

সূর্যকে ঢেকে তার কালোকেশে,জননীর নিখাদ মমতায় ঘুম জাগিয়ে পৃথিবীর চোখে,মধুর গুঞ্জনে আঁচলে বেঁধে নক্ষত্র রাত নেমে আসতো সুচতুর-ক্রমশ উচু হওয়া বিনাশী দেয়াল ডিঙ্গিয়ে,মখমলের শয্যায় ছলকে দিতে কামনার জলনামাতো বৃষ্টি অঢেল।মিটমিট করে তাকিয়ে থাকা একচোখা তারাগুলো ছাড়াআর কেউ জানতো না তার কথা,না তির্যক বাতাস না হিংসুটে জ্যোৎস্নার দল।আজ আর সেই রাত দেখি না, যা দেখি তার সবটুকুই আঁধার,জানি না কোথায় লুকিয়েছে সে, ভাসিয়েছে তার কোমল দেহ কার দ্যোতনায়,নাকি সেঁজেছে গ্রন্থকীট, আনকোরা উপমায় খুঁজে পেতে অমিয়তা!রোজকার আঁধার দেবী,এখন আর নেমে আসে না সমুদ্রকে বানিয়ে তার পা’য়ের নূপুর,স্রোতকে বানিয়ে অতুল ঝংকার,নেমে আসে না সেই তীর্থের রাত চোখটিপে ধুসর গোধূলিকে।...

Page 1 of 3412345Next
Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by প্রহেলিকা