বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০১৪

সংজ্ঞাহীন এক প্রেম

অলিখিত প্রত্যশায় বেনামী স্বপ্নের যে বাগান গড়েছি, তার নিঃসঙ্গ দেয়াল পেড়িয়েবেখেয়ালে মাড়িয়ে ঘাসের শিশির চলে এসো,মৃত্যু ফুটিয়ে অপেক্ষার; কোন এক পোয়াতি আঁধারে-নিঃসংকোচে গ্রহন করোনিবিড় পরিচর্যায় লালিত অনুক্ত শব্দের মালিকানা।চলে এসো হে মোহমায়া দিকভ্রান্ত বাতাসেকোমর ছোঁয়া চুল সুবাসে ঘুম এঁকে দিও রাত জানালায়,অবিন্যস্ত খোপাঁয় গুঁজে এক কবির সব উপমামৃদু টোকায় ভাসিয়ে দিও ঘরের শূণ্য কলস। নির্ভয়েই এসো এক বিকালের প্রাণ হয়েরাতবর্ষার তান হয়ে,হঠাৎ একদিন অবাক করা সংজ্ঞাহীন এক প্রেম হয়ে।বিশ্বাসী হাত ধরেপাঁজরের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসোশুষ্ক ঠোঁট পাবে অনায়াসে দখল করে নিও,এক সমুদ্রের গর্জন তুলে নীরবতায় জাগিয়ে দিও লবন চর প্রহরে প্রহরে।উষ্ণ চুম্বনে সেঁকে নিও একাকিত্বের কষ্টে পোড়া শীতল রাত। কাঁধবালিশে মাথা রেখে বুনে দিয়ে গাঢ় শ্বাসফলিয়ে নিও এক মৌসুমের শস্যদান...

শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০১৪

রাত্রি বিলাস

নিঃসীম অন্ধকার চোখেকেটে যায় সারারাত বাতাসের সুড়সুড়িতে,অচল বোধের শায়রে বসেপ্রশ্নহীন হাত কুড়িয়ে নেইআস্থার রসদ চুয়ে পরা আঙ্গুলের ভাঁজ।স্পন্দনহীন পরশে স্বর্গ নেমে  আসেএলোচুলে জন্মে বাহারি দীর্ঘশ্বাস সন্তর্পণে।সুরেলা কন্ঠে শুনে আঁতেল উক্তিসৃষ্টি হয় বিশ্বাসী নহরঅদৃশ্য হাতছানিতে কাটে মৌন সাঁতার।কাদাজলে প্রলম্বিত ফেরার পথ,পেছনে ভোরের কুয়াশায় গা ঢাকে বাড়ি,যে বাড়ির ছাদে ঝুলন্ত স্বাধীনতা, নিরন্ধ্র দেয়াল টপকেআকাশ হয়না কোন সময়ের সাক্ষ...

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০১৪

অবিনশ্বর মুখ

নিবিড় বিকালে, বন্দী করতে শুন্য ক্যানভাসে;অপলক তাকিয়ে ছিলাম যে গোমরা মেঘগুলোর দিকে।খানিক পূর্বে, হঠাৎ নেমে আসে তারা বৃষ্টি হয়ে,জলমানবের অপেক্ষার স্লোগানে;ভেজাতে তার শুষ্ক ঠোট,চিবুক ছুঁয়ে হিম পরশে জাগাতে তার কাব্য বিলাস।এদিকে বেখেয়ালী ঘোরে অসম্পন্ন থাকে অন্তিম ছবি,ভুলে যাই সেই চিরচেনা মেঘের রঙ।পাথরের আড়ালে অসীম নিঃশব্দে লুকিয়ে থাকাঅভিমানী ক্যাকটাস; শেষ কবে কোন প্রহরে,মুখ তুলে তাকিয়েছিল, কোন বিহ্বল দুপুরে,অলিখিত দিব্যি তুলে খুলেছে তার চটুল খোঁপা,শর্তবিহীন দৃষ্টিতে শেষ কবে, কোন আঁধারে-শয্যা পেতেছিল ঈশ্বরহীন বিন্দুতে!সব কিছুই ভুলে গেছি।তবে আজও ভুলতে পারিনি,রাতের শেষে জেগে থাকা অন্ধকারে,আধুলির নির্বাক আঁচলে আশ্রিত মুখখানি।...

শনিবার, ৫ জুলাই, ২০১৪

হেলাল হাফিজ-এর কাব্য (৪)

যার যেখানে জায়গা========================ভোলায়া ভালায়া আর কথা দিয়া কতোদিন ঠাগাইবেন মানুষভাবছেন অহনো তাদের অয় নাই হুঁশ।গোছায়া গাছায়া লন বেশি দিন পাইবেন না সময়আলামত দেখতাছি মানুষের অইবোই জয়।কলিমুদ্দিনের পোলা চিডি দিয়া জানাইছে,–’ভাইআইতাছি টাউন দেখতে একসাথে আমরা সবাই,নগরের ধাপ্‌পাবাজ মানুষেরে কইও রেডি অইতেবেদম মাইরের মুখে কতোক্ষণ পারবো দাঁড়াইতে।’টিকেট ঘরের ছাদে বিকালে দাঁড়ায়ে যখন যা খুশি যারা কনকোনো দিন খোঁজ লইছেন গ্রামের লোকের সোজা মনকী কী চায়, কতোখানি চায়কয়দিন খায় আর কয়বেলা না খায়া কাটায়।রাইত অইলে অমুক ভবনে বেশ আনাগোনা, খুব কানাকানি,আমিও গ্রামের পোলা চুত্‌মারানি গাইল দিতে জানি।যুগল জীবনী==============================আমি ছেড়ে যেতে চাই, কবিতা ছাড়ে না।বলে,–’কি নাগরএতো সহজেই যদি চলে যাবেতবে কেন ঘর বেঁধেছিলে উদ্ধাস্তু ঘর,কেন করেছিলে চারু বেদনার...

হেলাল হাফিজ-এর কাব্য (৩)

নিরাশ্রয় পাচঁটি আঙুল======================নিরাশ্রয় পাচঁটি আঙুল তুমি নির্দ্বিধায়অলংকার করে নাও, এ আঙুল ছলনা জানে না।একবার তোমার নোলক, দুল, হাতে চুড়িকটিদেশে বিছা করে অলংকৃত হতে দিলেবুঝবে হেলেন, এ আঙুল সহজে বাজে না।একদিন একটি বেহালা নিজেকে বাজাবে বলেআমার আঙুলে এসে দেখেছিলোতার বিষাদের চেয়ে বিশাল বিস্তৃতি,আমি তাকে চলে যেতে বলিনি তবুওফিরে গিয়েছিলো সেই বেহালা সলাজে।অসহায় একটি অঙ্গুরীকনিষ্ঠা আঙুলে এসেই বলেছিলো ঘর,অবশেষে সেও গেছে সভয়ে সলাজে।ওরা যাক, ওরা তো যাবেইওদের আর দুঃখ কতোটুকু? ওরা কি মানুষ?নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়==========================এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়মিছিলের সব হাতকন্ঠপা এক নয় ।সেখানে সংসারী থাকে, সংসার বিরাগী থাকে,কেউ আসে রাজপথে সাজাতে সংসার ।কেউ আসে জ্বালিয়ে বা জ্বালাতে সংসারশাশ্বত...

শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪

বাংলার ছবি

বাংলার পথ বাংলার বর্ষাকাল  বাংলার পথ  বাংলার গ্রাম ...

হেলাল হাফিজ-এর কাব্য (২)

কবি ও কবিতা========================কবির জীবন খেয়ে জীবন ধারণ করেকবিতা এমন এক পিতৃঘাতী শব্দের শরীর,কবি তবু সযত্নে কবিতাকে লালন করেন,যেমন যত্নে রাখে তীরজেনে-শুনে সব জল ভয়াল নদীর।সর্বভূক এ কবিতা কবির প্রভাত খায়দুপুর সন্ধ্যা খায়, অবশেষেনিশীথে তাকায় যেন বয়ঃসন্ধিকালের কিশোরী,কবিকে মাতাল করেশুরু হয় চারু তোলপাড়,যেন এক নির্জন বনের কোনো হরিণের লন্ডভন্ড খেলানিজেরই ভিতরে নিয়ে সুবাসের শুদ্ধ কস্তুরী।কবির কষ্ট দিয়ে কবিতা পুষ্ট হয়উজ্জ্বলতা বাড়ায় বিবেক,মানুষের নামে বাড়ে কবিতার পরমায়ুঅমরতা উভয়ের অনুগত হয়।কবিতার কসম খেলাম=============================আমি আর আহত হবো না,কোনো কিছুতেই আমি শুধু আর আহত হবো না।যে নদী জলের ভারে হারাতো প্লাবনেএখন শ্রাবণে সেই জলের নদীর বুকেজলাভাবে হাহাকার দেখে আমি আহত হবো না।সবুজ সবুজ মাঠ চিরে চিরেকৃষকের রাখালের পায়ে গড়া দু’পায়া পথের...

হেলাল হাফিজ-এর কাব্য (১)

অন্যরকম সংসার ======================= এই তো আবার যুদ্ধে যাবার সময় এলো আবার আমার যুদ্ধে খেলার সময় হলো এবার রানা তোমায় নিয়ে আবার আমি যুদ্ধে যাবো এবার যুদ্ধে জয়ী হলে গোলাপ বাগান তৈরী হবে। হয় তো দু’জন হারিয়ে যাবো ফুরিয়ে যাবো তবুও আমি যুদ্ধে যাবো তবু তোমায় যুদ্ধে নেবো অন্যরকম সংসারেতে গোলাপ বাগান তৈরী করে হারিয়ে যাবো আমরা দু’জন ফুরিয়ে যাবো। স্বদেশ জুড়ে গোলাপ বাগান তৈরী করে লাল গোলাপে রক্ত রেখে গোলাপ কাঁটায় আগুন রেখে আমরা দু’জন হয় তো রানা মিশেই যাবো মাটির সাথে। মাটির সথে মিশে গিয়ে জৈবসারে গাছ বাড়াবো ফুল ফোটাবো, গোলাপ গোলাপ স্বদেশ হবে তোমার আমার জৈবসারে। তুমি আমি থাকবো তখন অনেক দূরে অন্ধকারে, অন্যরকম সংসারেতে। অগ্ন্যুৎসব ============================ ছিল তা এক অগ্ন্যুৎসব, সেদিন আমি সবটুকু বুক রেখেছিলাম স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রে জীবন বাজি ধরেছিলাম...

বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই, ২০১৪

নির্লিপ্ত সংহার

আজও আমি বেঁচে আছি পাথরের ভারে ফুলে উঠা জলের মত,কিঞ্চিৎ হাসি জ্বালিয়ে ঠোঁটের কোণে করতালি বাজিয়ে অবিরত।বেঁচে থাকি আলোর হাঁট ভাঙা আর্তনাদে জীবন্ত হলুদ পাতায়-ঘর বেঁধে উজ্জ্বল দিনের হত্যাকারী সূর্যাস্তের চোখের মায়ায়।বাতাসের ঘূর্ণিতে সৃষ্ট আধুনিক নন্দনতত্ত্বের নির্যাস পানে-বেঁচে আছি, বেঁচে থাকতে হয়, সবুজেরাও যেখানে আঘাত হানে।আর কত রাত জানালায়, চুমু দিব আঁধারের সুগোল খোঁপায়?আমিতো একদিন প্রেমিক ছিলাম কোনো কুমারীর হাত রেখায়-আমি ছিলাম একটি তরল বিন্দু বেখেয়ালে মুছে যাওয়া কালে,যে দিয়েছিলো পথের সন্ধান স্বপ্নীল পথিকের পাতা ঝরা ডালে।সদ্য পাওয়া দৃষ্টির পরিমিত বোধে ছুটে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়-সরল পথের বহুমুখী জালে ক্লান্ত হয়ে আবার পথ হারায়।আজ তবে,মানচিত্র পেরিয়ে এসে, আদিগন্ত আলোর এই বেনামী শহরে-অশরীরী বাতাসী বেশে ছুঁয়ে দাও আমায় এই নিঃসঙ্গ প্রহরে।নীরব অভিযোগের নীল উপত্যকায় গুঁজে দাও বিশ্বাসী মূল,কপালে লিখে দাও সমাপ্ত...

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০১৪

বৃষ্টিস্নাত শব্দেরা

কাল রাতের নির্জনে এক পশলা বৃষ্টি এসেছিলো,নীল অন্ধকার ঘরে, বিনা অনুমতিতেই-ধুয়ে দিয়ে গেছে ধুলোপড়া শব্দগুলোকে।বৃষ্টির মৃদু গুঞ্জনে প্রতিটি শব্দ পেয়েছে স্বচ্ছতা,এতটাই স্বচ্ছ যে, অনায়াসে স্পষ্ট হয়ে উঠেছিলো-পশ্চাতে দাঁড়ানো হিজল তলার ভোর,নোনাধরা নীল পোশাকে পরাধীনতার সুর।কত না মধুরতায় চতুর বিকালের স্রোত বয়ে যায়,যুগলের তত্ত্ব কথায় মৃত্তিকা আবার প্রাণ ফিরে পায়।হঠাৎ করেই শব্দগুলো নড়ে উঠে,ঘরময় শুরু হয় তাদের ছুটোছুটি,মুক্তির দাবিতে প্রকম্পিত করে ঘরের প্রতিটি স্তম্ভ।আমি অনিমেষে তাকিয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ-নির্বাক হয়ে "ভালবাসা" নামক শব্দটির দিকে।পেলব কন্ঠে বলেছিলাম,"আমি তো তোকে ভালবেসে তোর ধুলোমাখা শরীর নিয়ে বেঁচে ছিলাম,আজ তুই ও কি মুক্তি চাস?"উৎকর্ণ হয়ে শুনেছিলো আমার অস্পষ্ট ব্যাক্যগুলো,অতঃপর চিৎকার করে বলে উঠে,"কাপুরুষের ভালবাসা! আদৌ কি পেরেছিলে ভালবেসে-আমাকে...

Page 1 of 3412345Next
Twitter Delicious Facebook Digg Stumbleupon Favorites More

 
Design by প্রহেলিকা