আমার ঘর থেকে বের হয়ে কাজী নজরুল স্কয়ারের (ডি সি হিল) দিকে যাচ্ছিলাম বিকাল বেলা। বাসা থেকে এর
দুরুত্ব এক থেকে দের কিলোমিটার হবে। তো এই পথটুকুর মাঝেই দুটি ঘটনা দেখলাম যার কারণে আমার এই লেখা আসলে। যাওয়ার পথেই একবন্ধুকেও নিয়ে যাওয়ার কথা তার তার বাসার সামনের গেটে দাড়িয়েছিলাম বন্ধুর অপেক্ষায়। আমার বন্ধুটি যখন গেট দিয়ে বের হচ্ছিল ঠিক তখনি গেটের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিল একটা মেয়ে। শরীরের সাথে ফিট করে পরা জামা আর তার উড়নাটা ছিল গলায় ঝুলানো। আমার বন্ধু আমার দিকে তাকিয়ে গেট থেকে বের হওয়ার সময় অনিচ্ছাকৃত ভাবে একটু ধাক্কা লেগে যায় সেই মেয়েটির সাথে। ধাক্কা লাগার পর যথারীতি নিয়মে মেয়েটি বলল চোখে দেখতে পান্না নাকি ?ঘরে কি মা বোন নেই?মেয়ে দেখলেই ধাক্কা ইচ্ছা করে? বেয়াদব এইসব। তখন আমর বন্ধুটি শুধু হা করে তাকিয়ে ছিল। কি হয়ে গেলো বেপারটা সে কিছুই বোঝে উঠতে পারল না।
যাইহোক ঘটনাটা ঘটার পর আর কোথাও যাওয়ার ইচ্ছা করলো না। তারপর কিছুক্ষণ অন্যদিকে সময় কাটিয়ে দুজনে আসলাম কাজী নজরুল স্কোয়ারে। ভিতরে গিয়ে উপরের দিকে উঠেই দেখতে পেলাম এক তরুণ আর একটা তরুনীকে বসে ছিল ঝোপের আড়ালে যদিও তাদেরকে খুব ভালই স্পষ্ট করেই দেখা যাচ্ছিল। আর তাদের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়া মানুষগুলো পার্কে সুবাতাস খাওয়ার বদলে যেন পর্ণ ছবির কিছু দৃশ্য টিকেট ছাড়াই দেখছিল। আমরা যখন হেটে যাচ্ছিলাম তখন স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের নজরেও আসলো। এই সুন্দর বিকালে এমন দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল ওই তরুণ আর তরুনীকে গিয়ে কিছু টাকা দিয়ে আসি আর বলে আসি যে এই টাকাগুলো দিয়ে কোনো হোটেলে গিয়ে নোংরামিগুলো কর। কিন্তু পারলাম না। পরক্ষনেই অবাক হলাম পরের দৃশ্যটা দেখে। যখন মেয়েটা পিছনের দিকে অক্ত ফিরে তাকালো। চিনতে আর বাকি থাকলো না এটা সেই মেয়ে যে ঘন্টা খানেক আগে আমার বন্ধুটিকে অনেক বাজে কথা বলেছিল তার অনিচ্ছাকৃত ধাক্কা খাওয়ার জন্য। রীতিমত আমরা দুজনে অবাক হলেও মেয়েটি মনে হয় আমাদেরকে চিনতেই পারে নাই। না চিনারই কথা অবশ্য কারণ এখন বুঝতে পারলাম মুখ দিয়ে সে যাই বলুক না কেন মন থেকে সে খুশিই হয়েছে। আমার বন্ধুর সাথে অনিচ্ছাকৃত ধাক্কাটির জন্য সে এত কথা বলতে পারল আর সেই মেয়েই এখন প্রকাশ্যে পর্ণ ছবির দৃশ্য শত শত দর্শকের মাঝে বিলিয়ে যাচ্ছে। এটাকে ওই মেয়ের ভালবাসার ধরন ধরে নিলাম আমি।
ভালবাসা মানুষকে অন্ধ করে দেয় শুনতাম কিন্তু ওই দৃশ্য দেখে তা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছিলাম আর তাই তাদের ভালবাসা এমনি অন্ধত্ব লাভ করেছে যে শত মানুষের চলাচল তাদের কোনো গায়েই লাগলো না। সেলুট তাদের ভালোবাসাকে।
আমি বেয়াদব, আমি বখাটে , আমি ইভটিজার। কত কথাই না শুনতে হয় তুমাদের মুখে যখন চলার পথে অনিচ্ছাকৃত ভাবে তোমাদের শরীরে লেগে যায় আমাদের শরীর। কি করবে ছেলেরা বল যেখানে ১৬কোটি মানুষের বসবাস আমাদের দেশে সেখানে তো আর কারো সাথে ধাক্কা না খেয়ে রাস্তায় বের হওয়া সম্ভব না। ত্রাফ্ফিক জ্যাম যখন লাগে লক্ষ্য করবেন একটি রিক্সার পিছনেই এসে ধাক্কা দেয় আর একটি রিক্সা তাই বলে তো আর তোমরা মেয়েরা রিক্সাওয়ালা কে দোষারোপ করতে পার না দোষ ট্রাফিক জ্যামের।
কাউকে উত্সাহ করার জন্য আমার এই লিখা না। লিখাটা শুধু লিখেছি তোমাদের সবাইকে একটা প্রশ্ন করার জন্য।
আমার প্রশ্ন টা হচ্ছে ""আগে শুনতাম ভালবাসা নাকি থাকত চোখের চাহনির ভিতর মনের ভিতর। ভালবাসা নাকি দেখা যায় না শুধু অনুভব করা যায় তাহলে আজকাল ভালবাসা এত ডিজিটাল কীভাবে? ২ বন্ধু যখন রাস্তা দিয়ে হেটে যায় তখন এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে কিভাবে বলতে পারে দেখ দোস্ত ওই ছেলেটা আর মেয়েটা একজন আরেকজনকে ভালোবাসতেছে???
আশা করি উত্তরটা পাবো।
0 মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন